Bhopal Gas Tragedy

৪০ বছর আগের গ্যাস দুর্ঘটনার ফল এখনও ভুগছে ভোপাল, দুর্ঘটনার রাতের স্মৃতি ফিরে দেখলেন চিকিৎসক

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর রাতে ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৩৭৮৭। নানা শারীরিক ক্ষতি হয় প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৮
গ্যাস দুর্ঘটনার পর ভোপাল।

গ্যাস দুর্ঘটনার পর ভোপাল। — ফাইল চিত্র।

৪০ বছর আগের সেই গ্যাস দুর্ঘটনার ফল এখনও ভুগছে ভোপাল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রয়ে গিয়েছে বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব। ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানায় দুর্ঘটনার ৪০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে এমনটাই জানালেন প্রাক্তন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ।

Advertisement

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে শহরের ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় অনেকের। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অনেকে মারা যান। সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৭৮৭। কিন্তু বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এর প্রভাবে নানা শারীরিক ক্ষতি হয় প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের। তবে সেখানেই শেষ নয়, কয়েক প্রজন্ম ধরে ওই অঞ্চলের মানুষ বয়ে বেড়াচ্ছেন এই দুর্ঘটনার প্রভাব।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, শনিবার একটি সভার আয়োজন করেছিল ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মানুষদের একটি সংগঠন। সেখানেই বক্তৃতা করতে গিয়ে ভোপালের গান্ধী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসক ডিকে শতপথী জানান, দুর্ঘটনার এত দিন পরেও বিষাক্ত গ্যাসের কুপ্রভাব থেকে নিস্তার পায়নি ভোপাল। দুর্ঘটনার রাতে ৮৭৫টি দেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন শতপথী। পরবর্তী পাঁচ বছরে আরও ১৮ হাজার দেহের ময়নাতদন্ত করেন। উল্লেখ্য, এই ১৮ হাজার মানুষের সকলেই গ্যাস দুর্ঘটনায় বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু বিষাক্ত গ্যাসের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এড়াতে পারেননি।

সে সময় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের অনাগত সন্তানের উপর বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব পড়তে পারে কি না, তা নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছিল। কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছিল ইউনিয়ন কার্বাইড। যদিও ওই প্রাক্তন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, সে সময় দুর্ঘটনায় মৃত গর্ভবতী মহিলাদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল, মায়ের দেহে পাওয়া বিষাক্ত পদার্থের অন্তত ৫০ শতাংশ মিলেছে গর্ভস্থ ভ্রূণেও। আর যে সব মা বেঁচে গিয়েছিলেন, পরবর্তী কালে তাঁদের শিশুর স্বাস্থ্যেও থাবা বসিয়েছে বিষাক্ত গ্যাসের কুপ্রভাব। এখনও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তার ফল ভোগ করছেন ভোপালের মানুষ।

শনিবারের ওই অনুষ্ঠানে নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদের পাশাপাশি ছিলেন ১৯৮৪ সালের সেই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মানুষদের পরিজনেরাও। সভায় তাঁরা দুর্ঘটনার রাতের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। তাঁদেরই উদ্যোগে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি স্মরণসভা এবং পোস্টার প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে। চলবে আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আরও পড়ুন
Advertisement