অবৈধ ভাবে আমেরিকায় পাঠানোর নেপথ্যে কোন চক্র, উত্তর খুঁজছে ইডি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ভিসা ছাড়াই বেআইনি ভাবে ভারতীয়দের আমেরিকায় পাঠানোর কাজে জড়িত একটি চক্র নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই চক্রের সঙ্গে শুধুমাত্র এ দেশেই ৩৫০০ এজেন্ট যুক্ত রয়েছেন, যাঁরা বেশির ভাগই গুজরাতের। এক এক জনকে অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করাতে ৫৫-৬০ লাখ টাকা করে নেওয়া হত বলে সন্দেহ ইডির। কানাডা সীমান্ত হয়ে ভারতীয়দের অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করানোর চক্রের কথা অতীতেও বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে। ইডির দাবি, এই চক্রের সঙ্গে কানাডার কিছু কলেজ এবং ভারতের বেশ কয়েকটি সংস্থা জড়িত রয়েছে।
২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি কানা়ডা-আমেরিকা সীমান্তে চার ভারতীয়ের মৃত্যু হয়। তাঁরা একই পরিবারের বাসিন্দা। বাড়ি ছিল গুজরাতের একটি গ্রামে। অবৈধ ভাবে সীমান্ত পার করতে গিয়ে কনকনে ঠান্ডায় মৃত্যু হয় তাঁদের। ওই ঘটনায় গুজরাতের আমদাবাদে মামলা রুজু হয়। মূল অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে ভবেশ অশোকভাই পটেলের নাম। আমদাবাদ পুলিশের রুজু করা মামলার প্রেক্ষিতে আসরে নামে ই়ডিও। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে একটি পৃথক মামলা রজু করে ইডি।
ইডির তদন্তে উঠে আসে বিভিন্ন বেআইনি পথে কানাডা হয়ে আমেরিকায় পাঠানো হত ভারতীয়দের। যাঁরা অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করতে চাইতেন, তাঁদের আগে কানাডার কিছু কলেজে ভর্তি করানোর ‘ব্যবস্থা’ করা হত। তাঁদের জন্য করা হত কানাডার স্টুডেন্ট ভিসাও। কিন্তু কানাডায় পৌঁছনোর পর কলেজে ভর্তি করানোর বদলে কানাডা সীমান্ত দিয়ে বেআইনি ভাবে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হত আমেরিকায়। এই চক্রে এক এক জন ভারতীয়ের থেকে ৫৫-৬০ লাখ টাকা করে নেওয়া হত বলে সন্দেহ তদন্তকারী আধিকারিকদের।
সম্প্রতি এই মামলার তদন্তে মুম্বই, নাগপুর, গান্ধীনগর এবং ভদোদরার আটটি জায়গায় হানা দেন ইডির আধিকারিকেরা। তাতে মুম্বইয়ের দু’টি সংস্থা এবং নাগপুরের একটি সংস্থার এই অবৈধ চক্রের সঙ্গে যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। ইডির দাবি, এই চক্রের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় সাড়ে তিন হাজার এজেন্ট জড়িয়ে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭০০ জন এজেন্ট শুধুমাত্র গুজরাতেই রয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ৮০০ সক্রিয় এজেন্ট রয়েছেন।