গ্রাফিক: নিরূপম বল
দলের জন্য নির্ধারিত সময় ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও কী ভাবে রাজ্যসভায় বক্তৃতা করলেন দীনেশ ত্রিবেদী, প্রশ্ন তুলে তদন্তের দাবি করল তৃণমূল। এই মর্মে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের মু্খ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। সেখানেই এই দাবি তোলা হয়।
দীনেশ ত্রিবেদী যেদিন ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন, সেদিনই সুখেন্দুশেখর এই প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘বাজেটের উপর আলোচনার জন্য তৃণমূলের দু’জনের নাম নির্ধারিত ছিল। তাঁদের বলার পর দলের জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যায়। তারপরেও দীনেশ কী করে বক্তব্যের অনুমতি পেলেন?’’
শনিবার সুখেন্দুর চিঠিতে এই অভিযোগই বিস্তারিত লেখা হয়েছে। সুখেন্দু লিখেছেন, ‘দুপুর ১.২৫ থেকে বাজেট বিতর্কের জবাবি ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের। তার মধ্যেই হঠাৎ ৪ মিনিটের জন্য বলার সুযোগ পেয়ে যান দীনেশ ত্রিবেদী। ১.২৫ থেকে ১.২৯ পর্যন্ত তিনি কথা বলেন। তৃণমূলের সময় তখন শেষ হয়ে গিয়েছিল।কী ভেবে দীনেশ বলার অনুমতি পেলেন’?
তৃণমূল মনে করছে, এই ঘটনা রাজ্যসভার ইতিহাসে ‘অভূতপূর্ব’। ‘সব নিয়ম ভেঙে’ এ ভাবে দীনেশকে বলতে দেওয়ার সুযোগ কেন দেওয়া হল, তার তদন্ত করা উচিত। শুধু তাই নয়, বারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। ‘রাজ্যসভার গ্যালারিতে নির্দিষ্ট আসন রয়েছে দীনেশ ত্রিবেদীর। সেখান থেকে নেমে এসে কী করে তিনি কাউন্সিলএলাকায় বসলেন ও কথা বলতে শুরু করলেন?’এ ছাড়াও প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেই সময়ে স্পিকারের আসনে থাকা ডেপুটি চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে।
গত শুক্রবার ইস্তফা দেওয়ার সময় হঠাৎই উঠে দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করেন দীনেশ। বাজেট নিয়ে কিছু না বলে, নিজের দলের সমালোচনা শুরু করেন তিনি। ‘দলের মধ্যে দমবন্ধ লাগছিল’, ‘আন্তরাত্মার আওয়াজ শুনে ইস্তফা দিতে চাইছি’, কথাগুলো যেন বোমার মতো পড়তে থাকে রাজ্যসভায়। সেই সঙ্গে তা দেশের সব সংবাদমাধ্যমে প্রচারের আলোয় চলে আসে। সুখেন্দু পরে জানান, তিনি সেই সময়ে কক্ষে ছিলেন না। দুপুরের খাওয়ার সারতে গিয়েছিলেন। যদিও পরে পুরো ঘটনা শুনে অভিযোগ করেন, রাজ্যসভার নিয়ম ভাঙা হয়েছে বলে।
দীনেশের বলার সময়ে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান একাধিকবার বলেছিলেন, ‘‘ইস্তফা দেওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। নিয়ম মেনে ইস্তফা দিতে হবে।’’ চিঠিতেও বলা হয়েছে, এ ভাবে রাজ্যসভার কোনও সাংসদ ইস্তফা দিতে পারেন না। এই কাণ্ড একেবারেই সংসদের উচ্চকক্ষের নিয়ম বিরুদ্ধ।
চিঠির শেষে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল। অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘সংসদের উচিত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা’। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে,‘উচ্চকক্ষে তৃণমূলের ভাবমূর্তিকে আঘাত করার জন্য কোনওরকম ষড়যন্ত্র করে এই কাণ্ড ঘটনো হয়েছে কি না, তা-ও খুঁজে বের করা দরকার’।