Uttarakhand Bus Accident

পাহাড় বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে বাস, জানলা দিয়ে ছিটকে পড়ছেন যাত্রীরা! ভয়াবহ অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষদর্শীদের

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:০০
আলমোড়ার খাদে পড়ে রয়েছে বাস। উদ্ধারকাজে নেমেছেন স্থানীয়েরা।

আলমোড়ার খাদে পড়ে রয়েছে বাস। উদ্ধারকাজে নেমেছেন স্থানীয়েরা। ছবি: পিটিআই।

এখনও দৃশ্যটি ভুলতে পারছেন না উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ার প্রত্যক্ষদর্শীরা। চিৎকার শুনতে পেয়ে দেখেন, পাহাড়ের গা বেয়ে পড়ে যাচ্ছে একটি বাস। খোলা জানলা দিয়ে খাদে পড়ে যাচ্ছেন যাত্রীদের অনেকে। কেউ কেউ শক্ত করে জানলার গরাদ ধরার চেষ্টা করছেন। কিন্তু হাত ফস্কে যাচ্ছে! বাসটি খুব দ্রুত ২০০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়। ক্রমে চিৎকার বদলে যায় গোঙানি আর করুণ আর্তিতে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জন যাত্রীর। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বাসে চড়ানোতেই এই বিপত্তি। পুলিশের অন্য একটি সূত্রের দাবি, বাসটির ঠিকঠাক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। সে কারণেই পাহাড়ি রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।

Advertisement

সোমবার সকালে উত্তরাখণ্ডের পাউরি জেলার নৈনিদন্দ থেকে নৈনিতালের রামনগর যাচ্ছিল বাসটি। ছিলেন অন্তত ৪০ জন যাত্রী। পথে আলমোড়ার মারচুলা এলাকায় ২০০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়। যেখানে বাসটি পড়ে যায়, তার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে একটি নদী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পাহাড়ি রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই বাসটি খাদে পড়ে যায়। কয়েক জন যাত্রী জানলা দিয়ে ছিটকে পড়ে যান খাদে। যাত্রীদের চিৎকার শুনতে পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয়েরা। খাদে নেমে তাঁরা শুরু করেন উদ্ধারকাজ। জানলা দিয়ে বার করেন জীবিত এবং মৃত যাত্রীদের।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ। প্রায় ২৫ জনের দেহ উদ্ধার করা হয় বাস থেকে। বাকি যাত্রীদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসা চলার সময় আট জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের পথে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বাসটি যখন খাদে পড়ছিল, তখন বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছিল যাত্রীদের চিৎকার। বোঝা যাচ্ছিল, বাসের মধ্যে দলা পাকিয়ে যাচ্ছেন মানুষজন। খাদে বাস পড়ার পর বাঁচানোর আর্তি জানাচ্ছিলেন কয়েক জন। ক্রমে সেই শব্দ ক্ষীণ হতে থাকে। ওই যুবকের কথায়, ‘‘এখনও কানে বাজছে সেই চিৎকার।’’

আলমো়ড়া পুলিশের সুপার দেবেন্দ্র পিঞ্চা দুর্ঘটনার পরেই জানিয়েছিলেন, মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্করসিংহ ধামি মৃতদের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আহতদের এক লক্ষ টাকা দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফে। পাহাড়ি রাস্তায় কী ভাবে এত জনকে নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া বাসটি চলছিল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এর পরেই সক্রিয় হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ধামি। তিনি অ্যাসিসট্যান্ট রিজিয়োনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসার (এআরটিও)-কে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন। কুমায়ুন ডিভিশনের কমিশনারকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন