প্রতীকী ছবি।
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা চূড়ান্ত করেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও)। সংস্থার একটি সূত্রে এ কথা জানিয়ে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সঙ্কেত মিললেই ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ ও পরীক্ষার কাজ শুরু হবে।
প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার এই জাহাজ বিধ্বংসী এই ‘প্রথাগত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’ তৈরির কাজ শেষ হলে ভারতের উপকূলীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা হবে বলে ডিআরডিওর ওই সূত্রের দাবি। পাশাপাশি, ওই ক্ষেপণাস্ত্রের ‘ভূমি থেকে ভূমি’ সংস্করণ লাদাখের উঁচু পাহাড়ি এলাকার নিরাপত্তায় মোতায়েন করা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, বছর দুয়েক আগেই পাকিস্তানি নৌসেনার হাতে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সিএম-৩০২ তুলে দিয়েছে চিন। এই পরিস্থিতিতে এই ডিআরডিও-র পদক্ষেপ সময়োচিত বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
ভারতের হাতে বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি ‘শব্দের থেকে বেশি দ্রুতগামী’ (সুপারসনিক) ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘ব্রহ্মস’ রয়েছে। পৃথিবীর অন্যতম দ্রুতগামী (গতিবেগ ২.৮ ম্যাক অর্থাৎ, শব্দের চেয়ে ২.৮ গুণ বেশি) এই জাহাজ বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা প্রাথমিক ভাবে ছিল ২৯০ কিলোমিটার। সে সময় কিছু আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত বিধিনিষেধের কারণেই এই সীমারেখা তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে ভারত মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিমের (এমটিসিআর) সদস্য হওয়ার পরে রাশিয়ার নয়া প্রযুক্তির সহায়তায় ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়িয়ে ৪৫০ কিলোমিটার করা হয়। যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি সুখোই-৩০-এর মতো যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া যায় ‘ব্রহ্মস’।
আমেরিকার তৈরি জাহাজ বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হারপুন কেনার জন্য ২০২১ সালে পেন্টাগনের ডিফেন্স সিকিউরিটি কোঅপারেশন এজেন্সি (ডিএসসিএ)-র সঙ্গে নয়াদিল্লির আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। বিমান থেকে ব্যবহারযোগ্য ২২০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতকে দেওয়ার জন্য আমেরিকার কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্রও মিলেছে। ভারতের হাতে ৫,০০০ কিলোমিটার পাল্লার পরমাণু অস্ত্র বহনযোগ্য ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্ষেপণাস্ত্র থাকলেও শত্রুপক্ষের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নেই। ডিআরডিও প্রস্তাবিত নয়া ক্ষেপণাস্ত্র সেই চাহিদা পূরণ করতে পারে বলে মত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের।