ছবি: সংগৃহীত।
গ্রেটা থুনবার্গের 'টুলকিট' শেয়ার করার ‘অপরাধে’ ধৃত দিশা রবির বিরুদ্ধে তদন্তের খবর পরিবেশনকারী সংবাদমাধ্যমের একাংশকেও সতর্ক করল দিল্লি হাইকোর্ট। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ওই সংক্রান্ত খবর পরিবেশনের সময় চাঞ্চল্য ছড়ানোর চেষ্টা করেছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। এ নিয়ে ৩টি সংবাদমাধ্যমকে ইতিমধ্যেই নোটিস দিয়েছে হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টের মন্তব্য, “সাংবাদিকেরা যেমন সূত্রের নাম প্রকাশ করতে পারেন না, তেমনই তা (ওই সূত্রের খবর) নির্ভুলও হতে হবে।”
দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পরিবেশ আন্দোলনকারী দিশা রবি। দিশার দাবি, হোয়াট্সঅ্যাপে তাঁর ব্যক্তিগত কথাবার্তা সাংবাদিকদের একাংশের কাছে ফাঁস করে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। সাংবাদিকরাও তা প্রকাশ করেছেন সংবাদমাধ্যমে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আদালতে হলফনামা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। এ নিয়ে দিল্লি পুলিশকেও সতর্ক করেছে আদালত। দিল্লি পুলিশ যাতে নিজেদের হলফনামার বক্তব্যেই স্থির থাকে, তার পরামর্শ দিয়ে আদালতের মন্তব্য, “এমন তথ্য ফাঁস করা উচিত নয়, যা ব্যক্তির অধিকারকে খর্ব করে।”
শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের একাংশ বা দিল্লি পুলিশই নয়, আবেদনকারী দিশা রবিকেও কড়া বার্তা দিয়েছে আদালত। দিল্লি পুলিশ বা অন্য কোনও কর্তৃপক্ষের মর্যাদাহানি করতে যাতে তিনি প্রবৃত্ত না হন, সে নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্টে দিশার আবেদনের শুনানিতে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি প্রতিভা এম সিংহ। সংবাদমাধ্যমের কাছে তদন্তের উপাদান প্রকাশ করা নিয়ে দিশার অভিযোগ খতিয়ে দেখলেও ওই সংক্রান্ত কোনও সংবাদ প্রত্যাহার করতে নির্দেশ দেননি বিচারপতি। তবে ওই সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘‘খবর পরিবেশনের সময় তার উপর আরও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে সম্পাদকদের। যাতে তার প্রচারে তদন্ত বাধা না পায়।’’
কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের পোস্ট করা ‘টুলকিট’ শেয়ার করার পর দিল্লি পুলিশের কোপে পড়েন দিশা। ১৩ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরু থেকে দিশাকে গ্রেফতার করে দিল্লির আদালতে পেশ করে পুলিশ। অভিযোগ, আদালতে শুনানির সময় আইনজীবীর সাহায্য পাননি দিশা। পাশাপাশি, সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর ব্যক্তিগত কথাবার্তাও ‘ফাঁস’ করে দিয়েছেন তদন্তকারীরা। এ নিয়ে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন দিশা। তাঁর অভিযোগ, তদন্তকারীদের দাবি পক্ষপাতদুষ্ট এবং মানহানিকর। তবে আদালতে দিল্লি পুলিশের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজুর পাল্টা দাবি, যে কথাবার্তা ফাঁসের অভিযোগ করা হয়েছে, তা ৩ ফেব্রুয়ারির। এবং দিশাকে ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর মন্তব্য, “দিশা নিজেই হয়তো বিভিন্ন জনকে ওই তথ্য দিয়েছেন। তা হলে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করছেন কেন?”