প্রতীকী চিত্র।
তিন বছর পর ‘বিচার’ পেলেন এক মহিলা। করোনার সময় স্বামীকে হারিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সরকারের থেকে ক্ষতিপূরণ পাননি। সরকারের যুক্তি ছিল, মৃত ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তাঁর মৃত্যু হয়েছিল হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে। অগত্যা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। সেই মামলায় দিল্লি সরকারের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি।
সংবাদবমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০২১ সালের ১৯ জুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মামলাকারীর স্বামীর। তার আগে দু’মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হন তিনি। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। তবে মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা ছিল, করোনা নয়, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
অভিযোগ, রাজ্য সরকার এই শংসাপত্রকে ‘হাতিয়ার’ করে ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে। মৃতের স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামীই ছিলেন সংসারের এক মাত্র উপার্জনকারী। হৃদ্রোগ নয়, করোনা আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দিল্লি হাই কোর্টে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করেন ওই মহিলা।
দীর্ঘ দিন ধরে মামলা চলে হাই কোর্টে। সম্প্রতি বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদের বেঞ্চ এই মামলার রায় দেয়। রায়দানের সময় বিচারপতি বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য থেকে স্পষ্ট যে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসায় কোনও শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর শংসাপত্রে হৃদ্রোগে কথা উল্লেখ থাকা মানে এই নয় যে তিনি কোভিডের জটিলতার শিকার হননি।’’
করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে, মৃতের পরিবারকে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, করোনায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াটা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকেই কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রাজ্যের যে কোনও জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের মধ্যেই সেটি পড়বে। সুপ্রিম কোর্ট ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকার চাইলে এর বেশিও দিতে পারে। বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদ সুপ্রিম কোর্টের ২০২১ সালের সেই নির্দেশের কথা উল্লেখ করেছেন নিজের রায়ে।