জগদীশ টাইটলার। —ফাইল চিত্র।
১৯৮৪ সালে রাজধানী দিল্লিতে শিখ-বিরোধী হিংসায় কংগ্রেস নেতা জগদীশ টাইটলারের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল আদালত। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পরবর্তী ওই দাঙ্গায় টাইটলার খুন-সহ একাধিক অপরাধে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন বলে চার্জশিটে জানিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তারই ভিত্তিতে এই চার্জ গঠন।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টাইটলার শুক্রবার আদালতে দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। এর পরেই বিচারক রাকেশ সিয়ল বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে টাইটলারকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’’ গত ৩০ অগস্ট সিবিআই চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিচারক সিয়ল। প্রসঙ্গত, রাজধানীতে ’৮৪ সালে শিখ-বিরোধী হিংসার ঘটনায় তদন্ত করে গত বছরের ২০ মে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। এর পর ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই আদালত টাইটলারের বিরুদ্ধে সমন জারি করে। সেই সমন মেনে গত বছরের ৫ অগস্ট আদালতে হাজির হন টাইটলার। এর পর তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করেছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালত।
’৮৪-র দাঙ্গাপর্বের পুল বঙ্গাস হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত টাইটলার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বর, ঠাকুর সিংহ, বাদল সিংহ এবং গুরুচরণ সিংহের মৃত্যু হয়। পুল বঙ্গাসে একটি গুরুদ্বারে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত টাইটলার। সিবিআইয়ের দাবি, টাইটলার জনতাকে উত্তেজিত করে খুন এবং আগুন লাগানোয় প্ররোচিত করেছিলেন। সেই মামলাতেই গত বছর চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই। ১৯৮৪ সালের অক্টোবর মাসে নিজের শিখ দেহরক্ষীদের গুলিতে প্রাণ হারান দেশের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
তার পরই দেশের নানা প্রান্তে শিখ-নিধনের ঘটনা ঘটে। সরকারি মতে এই দাঙ্গায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও বেসরকারি সূত্রে জানা যায়, মৃতের সংখ্যা আট হাজারেরও বেশি। শুধু দিল্লিতেই প্রাণ হারান তিন হাজার মানুষ। টাইটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুল বঙ্গাশ অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্ররোচিত হিংসায় প্ররোচিত করেছিলেন তিনি। ওই এলাকায় উত্তেজিত জনতার হামলায় তিন জন শিখ ধর্মাবলম্বীর মৃত্যু হয়। ২০০৪ সালে কংগ্রেসের মনমোহন সিংহ সরকার মন্ত্রিসভায় তাঁকে রাখা হলেও বিতর্ক এবং সমালোচনার জেরে টাইটলারকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।