Arvind Kejriwal

বিজেপির উদ্দেশ্য ভাল নয়, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি গোটা দেশে নয় কেন? তোপ কেজরীওয়ালের

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের মনে আছে তো, উত্তরাখণ্ডে ভোটের আগে বিজেপি কী করেছিল? কমিটি তৈরি হল ঠিকই কিন্তু ভোটে জেতার পর সব ভুলে গেল। গুজরাতেও ভোট আসছে, এ বার বুঝে নিন।’’

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৩৪
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ কেজরীওয়ালের।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ কেজরীওয়ালের। ছবি— পিটিআই।

গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সঙ্ঘভি জানিয়েছিলেন, গুজরাতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর আগে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বার মন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ভিত্তি করে বিজেপিকে তুমুল আক্রমণ করল আম আদমি পার্টি। আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আক্রমণ, বিজেপি কেন দেশ জুড়ে এই বিধি চালুর কথা বলছে না! আসলে বিজেপির উদ্দেশ্য ভাল না।

শনিবারই হর্ষ জানিয়েছিলেন, গুজরাতে অভিন্ন দেওয়ানি চালু নিয়ে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। তার পরই সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি। এ বার কার্যত একই পথে বিজেপিকে আক্রমণ ছুড়ে দিলেন আপ প্রধান। কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘বিজেপির উদ্দেশ্য খারাপ। সংবিধানের ৪৪ ধারা স্পষ্ট বলছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রয়োগের দায়িত্ব সরকারের। তা হলে সরকারের উচিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধিটি প্রস্তুত করা। কারণ, এই বিধি প্রয়োগের আগে সব সম্প্রদায় ও সব স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সবাইকে সঙ্গে নেওয়া জরুরি।’’ এর পরেই সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণের রাস্তা নেন কেজরীওয়াল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের মনে আছে তো, উত্তরাখণ্ডে ভোটের আগে বিজেপি কী করেছিল? ওরা একটি কমিটি তৈরি করল ঠিকই কিন্তু ভোটে জেতার পর সব ভুলে গেল। গুজরাতেও ভোট আসছে, তাই সেখানেও একটা কমিটি তৈরি করে লোক দেখানো হল। আদতে কাজের কাজ কিছুই করার বাসনা নেই বিজেপির।

Advertisement

শনিবার গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মন্ত্রিসভা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রয়োগের আগে সব দিক খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি তৈরির ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে এই কমিটি রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রয়োগের সব দিক খতিয়ে দেখবে। তার পর সেই কমিটি সরকারের কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেবে। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই গুজরাতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রয়োগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, ঠিক একই কাজ বিজেপি উত্তরাখণ্ডের ভোটের আগেও করেছিল। কিন্তু ভোটে জেতার পর থেকে সে সবের নাম আর মুখে আনেন না বিজেপি নেতারা। গুজরাতের ক্ষেত্রেও সেই কৌশলই নিয়েছে মোদী-অমিত শাহের দল। প্রসঙ্গত, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি জারি করা বিজেপির নির্বাচনি ইস্তাহারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আগামী দিনে দেশ জুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি জারি হবে বলেও হামেশাই ভাষণে বলে থাকেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু এখনও দেশ জুড়ে সেই প্রক্রিয়া শুরুর কোনও উদ্যোগ ধরা পড়েনি। বিরোধীদের অভিযোগ, স্রেফ রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্যই বিজেপি ভোটের আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির গিমিক তোলে। আদতে কিছুই করে না।

প্রসঙ্গত, দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য এক আইনকে পরিভাষায় বলা হয় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। বর্তমানে দেশে এক একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত আইন এক এক রকম হয়। তা মূলত, নিয়ন্ত্রিত এবং নির্ধারিত হয় সেই ব্যক্তির ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে সেই পরিসর থাকবে না। প্রতিটি নাগরিকের জন্য এক আইন জারি হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement