রামদেবের সঙ্গে হর্ষ বর্ধন এবং নিতিন গডকড়ী। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
যোগগুরু রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলির তৈরি ‘করোনার ওষুধ’ করোনিলের ‘বিজ্ঞানসম্মত গবেষণাপত্র’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বিতর্ক তৈরি করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) সোমবার এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছে।
আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া শাখা টুইটারে জানিয়ে দিয়েছিল, ‘প্রথাগত পদ্ধতিতে তৈরি কোনও ওষুধ করোনা চিকিৎসার জন্য কার্যকরী কি না, সে বিষয়ে হু কোনও পরীক্ষা করেনি। কোনও সংস্থাকে শংসাপত্রও দেয়নি’। আইএমএ-র তরফে সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেও একজন চিকিৎসক। তাঁর উপস্থিতিতে হু-এর শংসাপত্র সম্পর্কে নির্জলা মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উচিত দেশের সামনে পুরো ঘটনা ব্যাখ্যা করা’।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রামদেব এবং হর্ষের উপস্থিতিতে করোনিলের ‘বিজ্ঞানসম্মত গবেষণাপত্র’ প্রকাশ অনুষ্ঠানের মঞ্চে ঝোলানো একটি ব্যানারে দাবি করা হয়েছিল, করোনিল হু-এর জিএমপি (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিসেস) শংসাপত্র পেয়েছে। পেয়েছে, ভারত সরকারের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই)-এর ‘সার্টিফিকেট অব ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডাক্ট’ (সিওপিপি) শংসাপত্রও।
.@WHO has not reviewed or certified the effectiveness of any traditional medicine for the treatment #COVID19.
— WHO South-East Asia (@WHOSEARO) February 19, 2021
বিজেপি-ঘনিষ্ঠ যোগগুরু রামদেবের সংস্থা করোনিল ওষুধ সম্পর্কে ‘মিথ্যা এবং অবৈজ্ঞানিক প্রচার চালাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছে আইএমএ। পাশাপাশি, ভারতীয় চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠনের প্রশ্ন, ‘পতঞ্জলির তথাকথিত ওষুধ দিয়েই যদি কোভিড-১৯ নিরাময় সম্ভব হয়, তবে সরকার কেন টিকা বানাতে ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করল?’ প্রসঙ্গত, হর্ষ বর্ধনের পাশাপাশি ওই অনুষ্ঠানে আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী হাজির ছিলেন।
প্রসঙ্গত, হু-এর টুইট সামনে আসার পরেই পতঞ্জলির তরফে আচার্য বালকৃষ্ণ একটি টুইট করে বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে জানাতে চাই, হু-এর জিএমপি সংক্রান্ত সিওপিপি শংসাপত্রটি আমরা ভারত সরকারের সংস্থা ডিসিজিআই-এর থেকে পেয়েছি। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, হু কোনও ওষুধকে স্বীকৃতি দেয় না বা বাতিল করে না’। কয়েক মাস আগে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা না দিয়েই বাজারে ‘করোনার ওষুধ’ আনার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল পতঞ্জলির বিরুদ্ধে। আয়ুষ মন্ত্রকের আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞাপন তুলে নিতে হয়েছিল তাদের।