দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে করোনার টিকাকরণ। কিন্তু দৈনিক সংক্রমণে এখন রাশ পড়েনি। গত কয়েক দিনে তা ফের পৌঁছে গিয়েছিল ১৩-১৪ হাজারের ঘরে। যদিও মঙ্গলবার তা ফের সাড়ে ১০ হাজারে নেমে এসেছে। কেরল, মহারাষ্ট্র-সহ কয়েকটি রাজ্য হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্যই দেশের দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছিল। যদিও দেশের দৈনিক মৃত্যু ১০০-র নীচে রয়েছে। পাশাপাশি বাড়ছে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৫৮৪ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ১০ লক্ষ ১৬ হাজার ৪৩৪ জন। মোট আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বে প্রথম আমেরিকা। সেখানে এখনও অবধি আক্রান্ত ২ কোটি ৮১ লক্ষ ছাড়িয়েছে। সেখানে মোট মৃত্যুও ৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলেও মোট আক্রান্ত ১ কোটি ছাড়়িয়েছে।
দেশে দৈনিক মৃত্যু সংখ্যা এখন ১০০-র নীচেই রয়েছে। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে ৫১ হাজার ৮০৬ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু ১২ হাজারের বেশি। দিল্লি,পশ্চিমবঙ্গেও তা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাব, গুজরাত, কেরলেও মোট মৃত্যুর সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য।
আক্রান্ত এবং মৃত্যুর পাশাপাশি দেশে কোভিড আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার পরিসংখ্যান শুরু থেকেই আশাব্যঞ্জক। ইতিমধ্যে দেশে ১ কোটি ৭ লক্ষ ১২ হাজার ৬৬৫ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ২৫৫ জন। দেশের মোট আক্রান্তের ৯৭.২৫ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সংক্রমণ হার ১.৫৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৮৫ জন।
দেশে দৈনিক আক্রান্ত গত মাস থেকেই কমতে শুরু করেছিল। কেরল ছাড়া বাকি রাজ্যগুলিতেও নিয়ন্ত্রণে এসেছিল তা। কিন্তু গত ক’দিনে মহারাষ্ট্রে ফের বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। পাশাপাশা ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাবের মতো রাজ্যেও আক্রান্ত বৃদ্ধি চিন্তা বাড়িয়েছিল। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে দৈনিক সংক্রমণ ৫ হাজার ছাড়ালেও কেরলে তা কমে আড়াই হাজারের নীচে।
পশ্চিমবঙ্গেও দৈনিক আক্রান্ত নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত ১৪৮ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯১০ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ লক্ষ ৬০ হাজার ২১৯ জন। করোনার জেরে এ রাজ্যে মোট প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজার ২৫১ জন।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)