— প্রতীকী চিত্র।
একই দিনে একসঙ্গে একই সংখ্যক ভোটার নিয়ে বিধানসভার নির্বাচন এবং লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। বিধানসভার ৬টি কেন্দ্রেই জয়ী এক পক্ষ। বিধানসভার পরাজিত দল আবার লোকসভায় জয়ী সামান্য ব্যবধানে! এমনই বিচিত্র ফল সামনে এসেছে মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ে।
গোটা দেশে ৪৮টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের সঙ্গেই কেরলের ওয়েনাড় ও মহারাষ্ট্রের নান্দেড় লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ছিল। নান্দেড়ে উপনির্বাচন হয়েছিল সেই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দিনই। টানটান লড়াইয়ের পরে লোকসভা উপনির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বিজেপির সন্তুকরাও হমবর্দেকে ১৪৫৭ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের রবীন্দ্র বসন্তরাও চবন। প্রাথমিক ভাবে বিজেপিও নান্দেড় লোকসভায় জিতেছে বলে ঘোষণাও হয়ে গিয়েছিল! নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফলপ্রকাশের পরে অবশ্য কংগ্রেসের ঘরে গিয়েছে সেই আসন। কংগ্রেসের সাংসদ বসন্তরাও চবনের মৃত্যুতে ওই আসনে উপনির্বাচন হয়েছে এবং কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল প্রয়াত সাংসদের ছেলে রবীন্দ্রকে।
রবীন্দ্র যেখানে সামান্য ব্যবধানে জিতেছেন, সেই লোকসভারই অধীন ৬টি বিধানসভা আসনে ছবি সম্পূর্ণ আলাদা! নান্দেড় উত্তর ও দক্ষিণ, এই দুই বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছে একনাথ শিন্দের শিবসেনা। ভোকর, নইগাও, দেগলুর এবং মুখেড়— এই চার বিধানসভা আসনে জিতেছেন শিন্দের সেনার জোটসঙ্গী বিজেপির প্রার্থীরা। ওই ছয় বিধানসভা আসনের মোট প্রাপ্ত ভোটের হিসেবে বিজেপি-সেনা পেয়েছে ৬ লক্ষ ১২ হাজার ৬২। কংগ্রেস পেয়েছে চার লক্ষ ২৭ হাজার ৪৬৫। আর লোকসভা উপনির্বাচনের হিসেব বলছে, বিজেপির প্রাপ্তি ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩৩১। কংগ্রেস সেখানে পেয়েছে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার, ৭৮৮। অর্থাৎ নান্দেড় লোকসভায় কংগ্রেস যা ভোট পেয়েছে, সেখানকার ৬টি বিধানসভা মিলিয়ে তার চেয়ে প্রায় এক লক্ষ ৬০ হাজার ভোট কম পেয়েছে তারা! আবার অন্য দিক থেকে দেখলে লোকসভায় কংগ্রেস ও বিজেপিকে যেখানে মোট ১১ লক্ষ ৭২ হাজার ১১৯ জন ভোট দিয়েছেন, বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে ওই দুই পক্ষকে ভোট দিয়েছেন ১০ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫২৭ জন। প্রসঙ্গত, নান্দেড় লোকসভা উপনির্বাচনে বঞ্চিত বহুজন আগাঢ়ীর (ভিবিএ) অবিনাশ ভোসিকর ৮০ হাজার ভোট পেয়েছেন।
দুই ভোটে এমন ফারাক দেখে বৈদ্যুতিন ভোট-যন্ত্রে ‘কারসাজি’ হয়েছে কি না, প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কংগ্রেস বিধানসভায় বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে দেখার কথা বলেছে। বাংলায় গত লোকসভা ভোটের সঙ্গে বরানগরে বিধানসভার উপনির্বাচন ছিল। বরানগরে সিপিএমের লোকসভার প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী যা ভোট পেয়েছিলেন, বিধানসভার প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য তার চেয়ে কিছু কম পেয়েছিলেন। কিন্তু নান্দেড়ের রহস্য তার চেয়ে ঢের গভীর!