(বাঁ দিকে) অমিত শাহ এবং মল্লিকার্জুন খড়্গে। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের চিঠির জবাব দিলেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে। শাহকে পাঠানো উত্তরে বুধবার খড়্গে লিখেছেন, ‘‘চিঠিতে আবেগ প্রকাশ করা সহজ। কিন্তু ক্ষমতাসীন এনডিএ-র উচিত, বিরোধীদের আস্থা অর্জনের মতো সহজতর বিষয়টিতে আরও গুরুত্ব দেওয়া।’’ সেই সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘‘আপনার আচরণের মাধ্যমে সহজেই বিরোধী নেতৃত্বের আস্থা অর্জন করতে পারেন।’’
মণিপুরকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতির দাবিতে সংসদে ধারাবাহিক বিক্ষোভ চালাচ্ছেন বিরোধী সাংসদেরা। এই আবহে মঙ্গলবার রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা খড়্গে এবং লোকসভার বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীকে চিঠি পাঠিয়ে সংসদ চালাতে সহায়তার আবেদন জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। টুইটারে সে কথা জানিয়ে শাহ লেখেন, ‘‘আমি আজ সংসদের উভয় কক্ষের বিরোধী নেতা শ্রী অধীরজি এবং শ্রী খড়্গেজিকে মণিপুরের ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সরকার মণিপুর নিয়ে আলোচনায় সব পক্ষের সাহায্য চায়। আমার আশা, এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধানের জন্য সব পক্ষ আমাদের সহযোগিতা করবে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শাহ তাঁর চিঠিতে অধীরকে ‘বিরোধী নেতা’ বলে সম্বোধন করলেও নরেন্দ্র মোদী সরকার লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতাকে ‘বিরোধী নেতা’র মর্যাদা দেয়নি। এ ক্ষেত্রে বার বারই সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ‘‘বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের কাছে লোকসভার বিরোধী দলনেতার পদ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ১০ শতাংশ সাংসদ নেই।’’ শাহের এমন আবেদনের পরেও অবশ্য রাজ্যসভায় বুধবার খড়্গের বক্তৃতায় বাধা দেন বিজেপি সাংসদেরা। তাঁরা ক্রমাগত ‘মোদী, মোদী’ স্লোগান তোলেন। এক সময় ট্রেজারি বেঞ্চের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা খড়্গে বলেন, ‘‘এটি স্বাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। এটি আমার অপমান। আমার আত্মসম্মানকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। যদি এই সভা সরকারের নির্দেশে পরিচালিত হয়, তা হলে আমি বুঝব এখানে গণতন্ত্র নেই।’’
তার আগে সোমবার লোকসভায় শাহ বলেন, ‘‘মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে সরকারের কোনও আপত্তি নেই।’’ যদিও সেই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী মোদী অংশ নেবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। কোন ধারায় সেই আলোচনা হবে, সে বিষয়েও সুস্পষ্ট ভাবে কিছু জানাননি তিনি। ২৬৭ ধারায় লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সব কর্মসূচি বন্ধ রেখে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ‘ঘটনা’-সহ মণিপুরের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ভোটাভুটি-সহ আলোচনার দাবিতে শুক্রবার নোটিস দিয়েছিল কংগ্রেস-সহ কয়েকটি বিরোধী দল। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী ২৬৭ ধারার পরিবর্তে ১৭৬ ধারায় আলোচনা চেয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধীরা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শাহ সোমবার বলেছিলেন, ‘‘আমরা সভায় এই বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। আমি বিরোধীদের অনুরোধ করছি এই বিষয়ে আলোচনা করতে দিন। এই স্পর্শকাতর বিষয়ে দেশ যাতে সত্য জানতে পারে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’