Congress

রাও-কেশরীর পথে ওয়ার্কিং কমিটির ভোট? না কি সনিয়া-রাহুলের মতোই ‘অনুগত’ বাছবেন খড়্গে?

ওয়ার্কিং কমিটিতে সভাপতি এবং কংগ্রেস সংসদীয় দলনেতা ছাড়া ২৩ জন পূর্ণাঙ্গ সদস্য থাকেন। এর মধ্যে ১২ জন নির্বাচিত হন এআইসিসি অধিবেশনে, প্রতিনিধিদের ভোটে। ১১ জনকে সভাপতি মনোনীত করেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:২০
Congress plenary session 2023: May president Mallikarjun Kharge to go for CWC elections

১৯৯৭ সালে সীতারাম কেশরীর জমানায় কলকাতায় এআইসিসি অধিবেশনে শেষ বার হয়েছিল ওয়ার্কিং কমিটি নির্বাচন। এ বার ভোট করাবেন মল্লিকার্জুন খড়্গে? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রস্তুতি দীর্ঘ দিনের। পদক্ষেপ নিঃশব্দে। ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে শুক্রবার কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের সূচনায় দলের দুই প্রাক্তন সভাপতি সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর অনুপস্থিতি দেখে এমনই ধারণা করছেন কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ। তাঁদের মতে, ১৫ হাজার এআইসিসি প্রতিনিধির অংশগ্রহণে এই কর্মসূচির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ— ওয়ার্কিং কমিটি নির্বাচন পর্ব থেকে ‘হাত ধুয়ে ফেলতে’ চাইছে গান্ধী পরিবার। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।

কংগ্রেসের সংবিধানের ১৯ নম্বর ধারা বলছে, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক সমিতিতে ২৫ জন ‘ভোটাধিকার প্রাপ্ত সদস্য’ থাকতে পারেন। এ ছাড়া সভাপতির পছন্দ অনুযায়ী স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাবে ‘আমন্ত্রিত’ সদস্যের ঠাঁই হতে পারে। ওয়ার্কিং কমিটিতে সভাপতি এবং কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা ছাড়া ২৩ জন পূর্ণাঙ্গ সদস্য থাকেন। এর মধ্যে ১২ জন নির্বাচিত হন এআইসিসি অধিবেশনে। প্রতিনিধিদের ভোটে। বাকি ১১ জনকে মনোনীত করেন কংগ্রেস সভাপতি।

Advertisement
কলকাতায় এআইসিসি অধিবেশন। প্রথম বার রাজনৈতিক মঞ্চে সনিয়া।

কলকাতায় এআইসিসি অধিবেশন। প্রথম বার রাজনৈতিক মঞ্চে সনিয়া। ফাইল চিত্র।

অর্থাৎ, সভাপতি হিসাবে মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং সংসদীয় দলের নেত্রী হিসাবে সনিয়া ওয়ার্কিং কমিটিতে থাকবেন। প্রশ্ন হল, বাকি ১২টি পদে নির্বাচন হবে কি না! ইতিহাস বলছে, শেষ বার ওয়ার্কিং কমিটিতে নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৭ সালের অগস্টে। প্রয়াত সীতারাম কেশরীর জমানায় কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ঘটনাচক্রে, সেই অধিবেশনেই প্রথম ‘আমন্ত্রিত’ হিসাবে এআইসিসির মঞ্চে ‘আবির্ভাব’ হয়েছিল সনিয়ার। কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য হয়েছিলেন কলকাতাতেই। ওই অধিবেশনের সময়ই পাল্টা ‘আউটডোর’ সমাবেশ থেকে নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ার সূচনা করেছিলেন তৎকালীন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কংগ্রেস সভাপতি পদে কেশরীর পূর্বসূরি পিভি নরসিংহ রাওয়ের জমানায় ১৯৯২ সালে তিরুপতি অধিবেশনে ওয়ার্কিং কমিটির নির্বাচন হয়। কিন্তু ১৯৯৮ থেকে সনিয়া যত দিন কংগ্রেস সভানেত্রী ছিলেন, সেই সময়ে এবং মাঝখানে রাহুলের জমানাতেও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে কোনও নির্বাচন হয়নি। দলীয় প্রধান হিসাবে তাঁরাই সমস্ত সদস্যকে মনোনীত করেছেন।

কিন্তু সনিয়ার জমানার শেষ পর্বে ২০২০-র অগস্টে দলের বিক্ষুব্ধ ‘জি-২৩’ গোষ্ঠীর নেতারা দাবি তুলেছিলেন, সভাপতি থেকে কার্যকরী সমিতি-সহ সংগঠনের সব স্তরেই নির্বাচন হোক। ‘অনুগত’ এবং ‘তাঁবেদার’ নেতাদের পরিবর্তে জনভিত্তি নিয়ে উঠে আসা নেতারা সামনে এলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দল দিশা পাবে বলেও গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, জিতিন প্রসাদেরা জানিয়েছিলেন। সনিয়া সেই দাবি মেনে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন হবে। রাহুলও তেমনটাই চেয়েছিলেন। সেই পথ ধরেই ১৯৯৮ সালের পরে (যে ভোটে জিতেন্দ্র প্রসাদকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন সনিয়া) আবার সভাপতি নির্বাচন হয়েছে কংগ্রেসে। শশী তারুরকে হারিয়ে সভাপতি হয়েছেন গান্ধী পরিবারের ‘আস্থাভাজন’ খড়্গে। এ বার কি ওয়ার্কিং কমিটির নির্বাচনের পালা? আজাদ, সিব্বল, জিতিনরা দল ছাড়লেও দাবি কিন্তু এখনও রয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement