Modi Surname Case

‘অপব্যবহার করা হয়েছে বিচার প্রক্রিয়ার’! মোদী পদবি মামলায় সুপ্রিম কোর্টকে জানালেন রাহুল

৪ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই পর্যায়ে মামলার দীর্ঘায়িত শুনানির প্রয়োজন নেই। সাজার উপর স্থগিতাদেশ হবে না বহাল থাকবে, শুনানি হবে তা নিয়েই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ২০:৩৪
Congress leader Rahul Gandhi  alleges gross abuse of judicial process in his affidavit on Modi surname case before SC

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।

মোদী পদবি নিয়ে তাঁর মন্তব্যে কোনও নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে অবমাননা করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এই দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, নিম্ন আদালত তাঁকে যে শাস্তি দিয়েছে তা সঠিক নয়। যদি তাঁর মনে হত তিনি অপরাধ করেছেন এবং তা লঘু করার প্রয়োজন, তবে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিতেন। এই মামলায় দেশের বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার করা হয়েছে বলেও হলফনামায় অভিযোগ করেছেন তিনি।

Advertisement

সাজার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর আবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযোগকারী বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদীকে গত ২১ জুলাই নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি আরএস গাভাই এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চ এই মামলায় অবস্থান জানতে নোটিস পাঠিয়েছে গুজরাত সরকারকেও। আগামী ৪ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা। হলফনামায় রাহুল জানিয়েছেন, অভিযোগকারী পূর্ণেশ তাঁকে ‘অহংকারী’ বলেছেন। যা অবমাননামূলক। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, এই পর্যায়ে মামলার দীর্ঘায়িত শুনানির প্রয়োজন নেই। রাহুলের সাজার উপর স্থগিতাদেশ হবে না বহাল থাকবে, শুনানি হবে তা নিয়েই।

‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী সাব্যস্ত রাহুলের দু’বছর জেলের যে সাজা গত ২৩ মার্চ সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দিয়েছিল, তার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে রাহুলের আবেদন গত ৭ জুলাই খারিজ করে দিয়েছিল গুজরাত হাই কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের বেঞ্চ। গুজরাত হাই কোর্টের আগে সুরাতের দায়রা আদালতও সাজার রায় বহাল রেখেছিল। সেই সাজার রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ১৭ জুলাই রাহুলের আইনজীবী শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। রাহুলের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির তরফে আবেদনে বলা হয়, ‘‘যদি গুজরাত হাই কোর্টের ৭ জুলাইয়ের রায় স্থগিত না করা হয়, তবে তা বাক্‌স্বাধীনতা, মতপ্রকাশ, স্বাধীন চিন্তাভাবনার কণ্ঠরোধের পরিবেশ তৈরি করবে।’’

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে ‘মোদী’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা দু’বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। গুজরাতের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদীর দায়ের করা ওই ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদনের জন্য তাঁকে ৩০ দিন সময় দিয়েছিলেন বিচারক। সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ২৪ মার্চ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেছিলেন।

এর পর রাহুল তাঁকে দোষী ঘোষণা এবং সাজার রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে গত ৩ এপ্রিল সুরাতেরই দায়রা আদালতে (সেশনস কোর্ট) আবেদন করেছিলেন। কিন্তু গত ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা সেই আবেদন খারিজ করে সাজা কার্যকরের রায় বহাল রাখেন। ফলে সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা হাতছাড়া হয় তাঁর। প্রসঙ্গত, বিচারক মোগেরা এক সময় একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা (বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) অমিত শাহের আইনজীবী ছিলেন।

গত ৭ জুলাই গুজরাত হাই কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের বেঞ্চও সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায় বহাল রাখায় সাজা এড়াতে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কেরলের ওয়েনাড়ের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ। আইনজীবীদের একাংশ মনে করেছেন, শীর্ষ আদালত যদি সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়, তবে সাংসদ পদ ফিরে পেতে পারেন রাহুল। অন্য দিকে, সাজার উপর স্থগিতাদেশ দিলে জেলযাত্রা এড়ালেও সাংসদ পদে ফিরবেন না তিনি। অন্য দিকে, সুরাত দায়রা আদালত এবং গুজরাত হাই কোর্টের মতো রাহুলের আবেদন খারিজ হয়ে গেলে তাঁর জেলে যাওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়বে। তবে চাপের মুখেও যে তিনি পিছু হটতে রাজি নন, হলফনামায় তা বুঝিয়ে দিয়েছেন রাহুল।

আরও পড়ুন
Advertisement