— ফাইল চিত্র।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ভগ্নিপতি, ব্যবসায়ী রবার্ট বঢরাকে আর্থিক লেনদেন এবং বেনামি সম্পত্তি কেনার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের তলব করল ইডি। যদিও, মঙ্গলবার ইডির দফতরে যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের এই সমনকে ‘বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদাহরণ’ বলে অভিহিত করেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর স্বামী।
হরিয়ানার একটি জমি দুর্নীতি মামলার সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল রবার্টের। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার তাঁকে এই মামলায় তলব করা হল। এর আগে গত ৮ এপ্রিল রবার্টকে ইডির দফতরে হাজির হতে বলা হলেও তিনি যাননি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘আমি যখনই জনগণের হয়ে আওয়াজ তুলেছি, ওরা আমাকে দমানোর চেষ্টা করেছে। তবে আমার লুকোনোর কিছু নেই। ইডি আমাকে যা ইচ্ছা প্রশ্ন করুক, আমি সব প্রশ্নের উত্তর দেব।’’
সূত্রের খবর, ৫৬ বছর বয়সি এই ব্যবসায়ীর বক্তব্য আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর অধীনে রেকর্ড করবে ইডি। বছর কয়েক আগে আর এক আর্থিক দুর্নীতির মামলাতেও রবার্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি কর্তৃক ৭.৫ কোটি টাকায় কেনা একটি জমি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ, ওই জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া মাত্র এক দিনেই সম্পন্ন হয়েছিল, যা শেষ হতে সাধারণত বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। পরে জমিটি ৫৮ কোটি টাকায় রিয়্যাল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। যদিও ২০২৩ সালে হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সরকার আদালতে স্বীকার করে নেয়, রবার্টের সংস্থার সঙ্গে ডিএলএফের জমি-চুক্তিতে বেআইনি কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া, ইডির আরও অভিযোগ, ২০০৯-এ অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভান্ডারির সঙ্গে রবার্ট লন্ডনেও একটি ‘বেনামি’ সম্পত্তি কিনেছিলেন। সেই মামলার চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রিয়ঙ্কারও। গত লোকসভা ভোটের আগে লন্ডনের ওই বাড়ি নিয়ে রবার্ট ও তাঁর সচিবের কিছু ইমেলের আদান-প্রদানের ‘তথ্য’ প্রকাশ্যে আনে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। যেখানে বাড়িটি মেরামতির জন্য টাকাপয়সা দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের কথা হয়েছে। লন্ডনের অভিজাত এলাকায় বাড়িটি নাকি এক বছরের মাথাতে বিক্রিও করে দেওয়া হয়। ওই মামলায় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতেও দীর্ঘ জেরা করা হয়েছিল রবার্টকে।
প্রসঙ্গত, সোমবারই রবার্ট জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব চাইলে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। রবার্টের স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা কেরালার ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ। রবার্ট সোমবার বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতৃত্ব যদি বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও বেশি মানুষকে শামিল করতে চান, তবে আমাকে নিশ্চয়ই রাজনীতিতে যোগ দিতে বলবেন।’’ তবে এখনও পর্যন্ত গান্ধী-নেহরু পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তাই তাঁর ‘একমাত্র রাজনৈতিক যোগসূত্র’ বলেও জানান তিনি। সেই ঘোষণার মাত্র এক দিনের মাথায় এ বার রবার্টকে তলব করল ইডি।