Abhishek Singhvi

রাজ্যপালের পদটিই তুলে দেওয়া হোক, দাবি অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির, উঠল বোস-ধনখড়দের পূর্বসূরির কথাও

বিজেপি-বিরোধী একাধিক রাজ্য সরকারের সঙ্গে সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যপালের সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এই আবহেই সিঙ্ঘভির মন্তব্য, “রাজ্যপালের পদ তুলে দেওয়া হোক বা এমন কাউকে বসানো হোক, যিনি রাজনীতির ঊর্ধ্বে।”

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৫
রাজ্যপাল পদে যাঁরা বসছেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির।

রাজ্যপাল পদে যাঁরা বসছেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যপালের পদটিই তুলে দেওয়া দরকার, কিংবা এই পদে সর্বসম্মতিক্রমে এমন কাউকে বসানো দরকার, যিনি ‘তুচ্ছ রাজনীতি’র সঙ্গে যুক্ত নন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোমবার এই মন্তব্য করলেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। বিগত দিনগুলিতে যে সব জায়গায় বিজেপি-বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় রয়েছে, সেই রাজ্যগুলিতে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বার বার সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও রাজভবনে ধনখড় জমানা ও তার পরবর্তী সময়ে বোসের জমানায় সেই ছবি দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের নেতারাও একাধিক বার রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে বিজেপির আঁতাঁতের তত্ত্ব উস্কে দিয়েছেন। এই আবহে রাজ্যপালের পদ নিয়ে সিঙ্ঘভির এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

কেন্দ্রে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে বিঁধে সিঙ্ঘভির দাবি, “এই সরকারের একটি বড় ব্যর্থতা হল, এটি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে অপমান করেছে ও সেগুলির গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তো রাজ্যপালেরা এমন ভূমিকা নেওয়ার চেষ্টা করেন, যেন তাঁরা দ্বিতীয় মুখ্য কার্যনির্বাহী। তাঁদের ভূমিকা সে ক্ষেত্রে অনেকটা একই খাপের মধ্যে দ্বিতীয় তরোয়ালের মতো।” সেই কারণেই তাঁর যুক্তি, রাজ্যপালের পদ তুলে দেওয়া প্রয়োজন কিংবা এই পদে সর্বসম্মতিক্রমে এমন কাউকে বসানো প্রয়োজন, যিনি রাজনীতির ঊর্ধ্বে।

রাজ্যপালের ভূমিকা প্রসঙ্গে মন্তব্যের সময় বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর প্রসঙ্গও তুলে আনেন তিনি। সিঙ্ঘভি বলেন, “গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর মতো মানুষ কি এ সব করবেন? তিনি আমাদের দলের থেকেই উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন, তা-ও আমি তাঁর নাম নিচ্ছি। কারণ এই ধরনের মানুষেরা নিজেদের সীমারেখা জানেন এবং তাঁরা কোনও ভুল কাজ করেন না।” কংগ্রেস সাংসদের মতে, হয় এই ধরনের মানুষদের রাজ্যপালের পদে বসানো হোক, কিংবা রাজ্যপালের পদ তুলে দেওয়া হোক।

সিঙ্ঘভির কথায়, “যদি কোনও রাজ্যপাল, কোনও মুখ্যমন্ত্রীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ান বা ভীতি প্রদর্শন করেন, তবে রাজ্যপালকে পিছু হটতে হবে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য ভোট হয়, রাজ্যপালের পদের জন্য নয়।” বিভিন্ন সময়ে রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে যে বিল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে, সে নিয়েও মন্তব্য করেন কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা। তিনি বলেন, “আজকাল যেটা হচ্ছে, কোনও রাজ্যপাল ৮-১০ বার একটি বিলে সম্মতি দিচ্ছেন না। আটকে রাখছেন। তারপর যখন আদালতে যাওয়া হচ্ছে, আদালত যখন বলছে বিল ছাড়তে হবে, তখন তিনি সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে প্রশাসনিক দিকে সমস্যা হচ্ছে, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।”

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও তামিলনাড়ু, কর্নাটকের মতো বিজেপি-বিরোধী শক্তি পরিচালিত রাজ্য সরকারের সঙ্গেও সেখানকার রাজ্যপালের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে। তার মধ্যে কর্নাটকে কংগ্রেস শাসিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতি মামলায় অনুমতি দিয়েছেন সেখানকার রাজ্যপাল থবরচাঁদ গহলৌত। যদিও কংগ্রেস সাংসদের দাবি, তিনি কর্নাটকের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেননি, কারণ সেটি বিচারাধীন বিষয়। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েই তাঁর এই মন্তব্য বলে দাবি সিঙ্ঘভির।

আরও পড়ুন
Advertisement