ভারতে ফেরার পরে মিরাম। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
অপহরণের ১৩ দিন পরে বাড়ি ফিরে লাল ফৌজের নির্মম অত্যাচারের কাহিনি শোনাল মিরাম তারোন। অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় অপহূত ওই কিশোরের বাবা অভিযোগ করেছেন, চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র শিবিরে হাত-পা-চোখ বেঁধে বেধড়ক লাথি মারা হয় তাঁর ছেলেকে। দেওয়া হয় ইলেকট্রিক শকও।
শুধু মারধরই নয়। চিনা সেনার শিবিরে ন’দিন বন্দি থাকার সময় মানসিক নিপীড়নও সইতে হয়েছে মিরামকে। কখনও খুনের হুমকি শুনেছে। কখনও বা কানের কয়েক ইঞ্চি দূরে স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের নল রেখে খালি করা হয়েছে পুরো ম্যাগজিন। প্রচণ্ড শব্দ কানে তালা লেগে গিয়েছে। বারুদের ঝলকানিতে ধাঁধিয়ে গিয়েছে চোখ। মিয়াম এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বলে তার পরিবারের দাবি। তার শরীরে রয়েছে চিনা সেনার নিপীড়নের চিহ্ন। প্রসঙ্গত, ২০২০-র সেপ্টেম্বরে অরুণাচল সীমান্তে পাঁচ গ্রামবাসীকে অপহরণের পরে একই ভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল চিনা সেনা।
১৮ জানুয়ারি অরুণাচলের আপার সিয়াং জেলার লুংটা জোর এলাকায় এলএসি লাগোয়া জঙ্গল থেকে ১৭ বছর বয়সি মিরামকে অপহরণ করে লাল ফৌজ। মিরাম ও তার বন্ধু জনি ইয়েয়িং ওই এলাকায় ওষধি গাছ সংগ্রহ করতে এবং পাখি শিকারে গিয়েছিল। মিরাম বন্দি হলেও চিনা সেনার নাগাল এড়িয়ে পালায় জনি। ফলে জানা যায়, অপহরণের কথা।
প্রাথমিক ভাবে চিনা ফৌজ অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করলেও শেষ পর্যন্ত মিয়ামকে ‘এলএসি লঙ্ঘনের অভিযোগে হেফাজতে নেওয়ার’ কথা জানায়। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর গত বৃহস্পতিবার তাকে ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনার হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পরে রবিবার টুটিং এলাকায় আপার সিয়াং জেলা প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বাড়ি ফেরানো হয় অপহৃত কিশোরকে।