শাসক-বিরোধী হইহল্লায় দুপুর পর্যন্ত মুলতুবি সংসদের দুই কক্ষেরই অধিবেশন। ছবি: টুইটার।
আদানিকাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গড়ার দাবির পাল্টা হিসাবে, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর নরেন্দ্র মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনাকেই হাতিয়ার করেছে বিজেপি। বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দফায় এই দুই প্রসঙ্গ নিয়েই তেতে উঠল লোকসভা এবং রাজ্যসভা। যদিও রাজ্যসভায় অস্কার সমারোহে ভারতের জয়জয়কার নিয়েও শিল্পীদের অভিনন্দন জানানো হয়। অন্য দিকে আদানিকাণ্ড নিয়ে জেপিসির দাবিতে সংসদের ঠিক বাইরে গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্না দেন তৃণমূল সাংসদরা।
আদানিকাণ্ড নিয়ে জেপিসির দাবি করছে বিরোধীরা। তাতে রাজি নয় মোদী সরকার। বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দফায় তা নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সংসদ। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি পাল্টা আঘাত হানতে অস্ত্র করছে ইংল্যান্ডে রাহুলের বক্তৃতাকে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ ছাড়া বিশেষ উপায়ও নেই সরকারের হাতে।
মঙ্গলবার অধিবেশনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল দাবি করেন, এক সংসদ সদস্য যে ভাবে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলছেন, তাতে সংসদ চুপ থাকতে পারে না। বিজেপি রাহুলকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি, দেশের সমস্ত সাংসদ যেন রাহুলের মন্তব্যের নিন্দা করেন, তারও আবেদন করেছে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে কংগ্রেসও। বিজেপিকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস বলে, ‘‘গণতন্ত্রের হত্যাকারীর মুখে আজ এ কী কথা শুনি!’’ সব মিলিয়ে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে সংসদে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়নি। সাংসদদের হল্লা থামাতে দুই কক্ষের অধিবেশনই মুলতুবি করে দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় দফার অধিবেশন শুরুর আগে মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে, বিরোধীদের বৈঠকে ডেকেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। যদিও কংগ্রেসের ডাকা বিরোধীদের বৈঠকে প্রত্যাশিত ভাবেই হাজির হননি তৃণমূল সাংসদেরা। তার বদলে তৃণমূল সাংসদরা সংসদ চত্বরেই গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আদানিকাণ্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পর আদানি গোষ্ঠীকে বাঁচাতে এসবিআই এবং এলআইসির টাকা ঢালা হচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। যে স্টেট ব্যাঙ্ক এবং এলআইসিতে কোটি কোটি সাধারণ মানুষের অর্থ গচ্ছিত রয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের টাকা লুট করাই বিজেপি সরকারের উদ্দেশ্য।