Indian Judiciary

বিচারপতি নিয়োগ: বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে তৎপরতা কেন্দ্রের

মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন চালু করে বিচারপতি নিয়োগের ব্যবস্থা পাল্টাতে চেয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দেয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ০৯:২৫

— প্রতীকী চিত্র।

বিচারপতির বাড়ি থেকে বস্তা ভর্তি নগদ টাকা উদ্ধারের প্রেক্ষিতে বিচারপতি নিয়োগের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যসভার নেতা জে পি নড্ডা বিরোধী দলগুলির সঙ্গে দৌত্য শুরু করলেন। তৃণমূল অবশ্য এই আলোচনায় বসতে চায়নি। উল্টে তারা প্রশ্ন তুলেছে, কী ভাবে উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় সাংবিধানিক পদে বসে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমালোচনা করছেন?

Advertisement

মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন চালু করে বিচারপতি নিয়োগের ব্যবস্থা পাল্টাতে চেয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দেয়। সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়ি থেকে বস্তা ভর্তি নগদ টাকা উদ্ধারের পরেই রাজ্যসভায় চেয়ারম্যান একাধিক বার মন্তব্য করেছেন, ওই আইন থাকলে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হত না। সংসদে সর্বসম্মতিতে পাশ হওয়া ও অর্ধেক রাজ্য সিলমোহর দেওয়ার পরেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন খারিজ করে দেওয়ারও সমালোচনা করেন। ফের সেই আইন প্রণয়নের পক্ষেও সওয়াল করেছেন চেয়ারম্যান। গতকাল এ বিষয়ে তিনি রাজ্যসভার সব দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। সেখানেই ঠিক হয়েছিল, নড্ডা আলাদা ভাবে সব দলের সঙ্গে কথা বলবেন।

নড্ডা আজ কংগ্রেসের জয়রাম রমেশের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তিনি তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও ডেরেক আলোচনায় বসতে চাননি। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের অবস্থান হল, সরকারের কোনও প্রস্তাব থাকলে তা নিয়ে লোকসভা বা রাজ্যসভায় আলোচনা হোক। লোকসভার তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে বলেন, “কোনও সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমালোচনা বা তাতে ভুল ধরতে পারেন না। সংবিধানের ১৪৩-তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হয়, তার বিরোধিতা নয়।’’ রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের নিজের ঘরে এ বিষয়ে বৈঠক প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, ‘‘কোনও আইন বা সরকারি নীতি সংসদে আলোচনা হওয়া উচিত। কোনও সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তির দফতরে নয়। এটা সংসদের প্রথা বিরুদ্ধ।’’

চেয়ারম্যান ধনখড় অবশ্য আজ রাজ্যসভায় যুক্তি দিয়েছেন, সংসদ, সরকার ও বিচারব্যবস্থাকে একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘাতে গিয়ে নয়, এক সঙ্গে কাজ করতে হয়। প্রবীণ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র বিচারপতির বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধারের ঘটনার সুযোগ নিয়ে বিচারপতি নিয়োগে নিজের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চাইছে। সরকারের হাতে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষমতা এলে সংবিধানে শেষ পেরেক পোঁতা হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইতিমধ্যেই নগদ উদ্ধারের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। পুলিশ রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, তিন-চার বস্তা ভর্তি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছিল। কমিটি তদন্ত শুরু করেছে।

তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের আর্জি জানিয়ে মামলা হয়েছে। আজ মামলাকারীরা দ্রুত শুনানির দাবি জানিয়ে বলেছেন, কোনও ব্যবসায়ীর ঘরে এত টাকা উদ্ধার হলে ইডি, সিবিআই হানা দিত। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না অবশ্য দ্রুত শুনানির বিষয়ে আশ্বাস দেননি।

Advertisement
আরও পড়ুন