‘নিউজ়ক্লিক’-এর সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ। —ফাইল চিত্র।
নিয়ম ভেঙে বিদেশি অর্থ ঢুকেছে সংবাদ পোর্টাল ‘নিউজ়ক্লিক’-এ! এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করল সিবিআই। বুধবার সকালে একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। প্রসঙ্গত, নিউজ়ক্লিক-এর বিরুদ্ধে বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন ভাঙার অভিযোগ উঠেছে।
আর্থিক তছরুপ এবং চিনকে সমর্থন করে ভারত-বিরোধী কিছু লেখা প্রকাশ করার অভিযোগে ‘নিউজ়ক্লিক’-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল ইডি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ অক্টোবর সকাল থেকে এই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত বহু সাংবাদিক এবং কর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় দিল্লি পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় সংস্থার সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং ওই সংস্থারই আর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক অমিত চক্রবর্তীকে। সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হলে মঙ্গলবার তাঁদের ফের দিল্লির এক নিম্ন আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তাঁদের দশ দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এর আগে গত ৬ অক্টোবর দিল্লি পুলিশের এফআইআর-এ উল্লিখিত অভিযোগগুলিকে ‘অসত্য’ বলে দাবি করে, দিল্লি হাই কোর্টে তা খারিজের আবেদন জানান প্রবীর এবং অমিত।
‘দ্য ওয়্যার’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের ১৭ অগস্ট ভারতীয় দণ্ডবিধির ইউএপিএ আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। দিল্লি ছাড়াও উত্তরপ্রদেশের নয়ডা এবং গাজ়িয়াবাদে ৩০টিরও বেশি জায়গায় মঙ্গলবার তল্লাশি অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশ। ইডির কাছ থেকে তথ্য পেয়েই এই অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু বৈদ্যুতিন গ্যাজেট, ফোন, হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা যায়। বেশ কিছু সাংবাদিককে লোধি রোডে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের দফতরেও নিয়ে আসা হয়। তল্লাশি চালানো হয় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বাড়িতে। দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট ৪৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এই তল্লাশি অভিযান এবং গ্রেফতারি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়। অনেকেই এই তল্লাশি অভিযানকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে সমালোচনা করেন। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বলেও অভিযোগ ওঠে। ‘দ্য প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া’ এই তল্লাশি প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা ‘ডিফেন্ডমিডিয়াফ্রিডম’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে শুরু করে। একটি বিবৃতি জারি করে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়া জানায়, ‘নিউজ়ক্লিক’-এর সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিক এবং লেখকদের বাড়িতে এই তল্লাশি খুবই উদ্বেগের। তারা এই গোটা বিষয়টির উপর নজর রাখছে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানান, কেউ যদি দোষ করে থাকে, তা হলে তদন্ত হতেই পারে। সুতরাং এই তদন্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করার যৌক্তিকতা আছে বলে তাঁর মনে হয় না।