নতুন করে অশান্ত মণিপুর। ছবি: পিটিআই।
দুই ছাত্রের হত্যাকাণ্ড ঘিরে নতুন করে উত্তপ্ত মণিপুর। দুই পড়ুয়াকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার তদন্তে বুধবার মণিপুর যাচ্ছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্পেশাল ডিরেক্টর অজয় ভাটনগরের নেতৃত্বাধীন দল বিশেষ বিমানে করে বুধবার ইম্ফল পৌঁছবে। এই ঘটনার তদন্তভার আগেই সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে এন বীরেন সিংহের সরকার।
কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে গত কয়েক মাস ধরেই তেতে রয়েছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে মণিপুরে। গত সোমবার দুই পড়ুয়ার দেহের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। যদিও ওই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মণিপুরে।
সূত্রের খবর, গত ৬ জুলাই থেকে ওই দুই পড়ুয়া নিখোঁজ ছিল বলে দাবি। ছবিতে দেখা গিয়েছে, দুই সশস্ত্র আততায়ীর সঙ্গে বসে রয়েছে দুই পড়ুয়া। অন্য একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, তাদের দেহ পড়ে রয়েছে। এনডিটিভি সূত্রে খবর, ওই দুই পড়ুয়ার দেহ এখনও উদ্ধার করা হয়নি। ওই দুই পড়ুয়াকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল বিষ্ণুপুর জেলায়। অভিযোগ, ওই দুই পড়ুয়াকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে মণিপুর সরকার। এক্স হ্যান্ডলে (টুইটার) মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, অপরাধীদের ধরতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত পদক্ষেপ করছে।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানান বীরেন সিংহ।
অন্য দিকে, দুই পড়ুয়াকে খুনের ঘটনা ঘিরে আবার অশান্ত মণিপুর। এই ঘটনায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন পড়ুয়ারা। সংঘর্ষের ঘটনায় ইম্ফলে প্রায় ৫০ জন পড়ুয়া জখম হয়েছেন।
এর আগে, মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। গত ৪ মে ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কঙ্গপোকপি জেলায় দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় বলে অভিযোগ। গণধর্ষণ করা হয় বলেও দাবি। কিছু দিন আগে ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ২৬ সেকেন্ডের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এই ঘটনায় নিন্দায় সরব হয় নানা মহল। তার পরেই একে একে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। মণিপুরে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যর্থ বলে দাবি করেছে বিরোধীরা। এই আবহে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে শোরগোল পড়ে যায়। ৭৮ দিন মৌনী থাকার পর মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের লজ্জা।’’ মণিপুরের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই নিয়ে অচল হয় সংসদের বাদল অধিবেশন। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।