বিআরএস নেত্রী কে কবিতা। — ফাইল চিত্র।
দিল্লির আবগারি মামলায় ধৃত তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও-এর কন্যা তথা ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) নেত্রী কে কবিতাকে আরও তিন দিন ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। শনিবার ইডি হেফাজত শেষে কবিতাকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সেই শুনানিতেই জামিনের আবেদন করেছিলেন চন্দ্রশেখরের কন্যা। তবে আরও পাঁচ দিন কবিতাকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে পাল্টা আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
শনিবার আদালতে ইডির পক্ষে সওয়াল করেছেন জ়োয়েব হুসেন। তিনি আদালতে আবগারি মামলায় কবিতার এক আত্মীয়ের কথাও উল্লখ করেছেন। ইডি জানায়, কবিতার ভাগ্নে মেখা সারণের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইডির তরফে জানানো হয় হেফাজতে থাকাকালীন ২৪ ঘণ্টা অন্তর অন্তর কবিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা রয়েছে তাঁর। সেই কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো তাঁকে প্রয়োজনীয় ওষুধও দেওয়া হচ্ছে।
আদালতে ইডি আরও দাবি করেছে, আবগারি মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তের বয়ানকে সামনে রেখে কবিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এমনকি, তাঁর মোবাইল থেকে প্রাপ্ত তথ্যকে সামনে রেখেও জেরা করেছেন গোয়েন্দারা। অনেক তথ্যই ফোন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। সেই সব তথ্য উদ্ধার করার জন্য বিআরএস নেত্রীর ফোন ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। শনিবারও ইডি দাবি করেছে, কবিতা আপ নেতাদের ১০০ কোটি টাকা দেওয়ায় অভিযুক্ত।
তার পরই কবিতার পক্ষ থেকে তাঁর আইনজীবী নীতেশ রাণা জামিনের আবেদন করেন। যদিও ‘তদন্তের অগ্রগতি’র কথা উল্লেখ করে কবিতার জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডি।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ১৫ মার্চ দুপুরে কবিতার হায়দরাবাদের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। চলে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। তার পর বিকেলে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। ইডির গ্রেফতারি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন কবিতা। ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চন্দ্রশেখরের কন্যা। যদিও শীর্ষ আদালত কবিতার আবেদনে সাড়া দেয়নি। নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করার পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বিশেষ বেঞ্চ শুনানির সময় জানায়, কবিতাকে অবশ্যই নীতি অনুসরণ করতে হবে। তাঁর জন্য কোনও নিয়ম ভাঙা যাবে না। শীর্ষ আদালতে এ ভাবে সরাসরি জামিনের আবেদন করা যায় না।
গত ডিসেম্বরে মণীশ সিসৌদিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত অমিত আরোরা নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, তখনই তারা জানতে পারে, এই মামলায় যুক্ত রয়েছেন কবিতা। কবিতাকে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত বছর জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। তবে সম্প্রতি তিনি ইডির তলব এড়িয়ে যান। এই মামলার চার্জশিটে ইডির অভিযোগ, দিল্লির তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা মদ সংক্রান্ত নীতির ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী সিসৌদিয়া আবগারি নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে দক্ষিণ ভারতের যে ব্যবসায়িক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন, কবিতা তার ৬৫ শতাংশের মালিক।
এই মামলায় ইডি দাবি করেছে, দিল্লির আবগারি নীতিতে বিশেষ সুবিধা পেতে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন কবিতা। সুবিধা পাওয়ার বিনিময়ে তিনি আপ নেতাদের ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছে ইডি।