Atiq Ahmed Murder

‘মুখের বুলি থেকে গুলি চলে বেশি’, জেল সুপারকে হুমকি দেন আতিক

বার বার বারণ করা সত্ত্বেও তাঁর দফতরে সামনে চলে আসেন আতিক। দরজায় দাঁড়িয়ে পুলিশ সুপারকে সম্বোধন করে সোজা দফতরের ভিতর প্রবেশ করেন তিনি।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
প্রয়াগরাজ শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০৪
Atique Ahmed

সুপারের জবাব শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন আতিক আহমেদ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

শনিবার রাতে পুলিশের ঘেরাটোপে থাকাকালীন আততায়ীদের হাতে প্রাণ হারান ‘হাই প্রোফাইল’ জেলবন্দি আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফ। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে আতিক হত্যাকাণ্ডের পর গোটা উত্তরপ্রদেশে রাজ্য সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছে। গ্যাংস্টার আতিক সম্পর্কে বহু তথ্যই এখন প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। প্রাক্তন জেল সুপার এইচবি সিংহ আতিকের প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন। ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের নাইনি সেন্ট্রাল জেলের সুপার পদে কর্মরত ছিলেন এইচবি সিংহ। সেই সময় নাইনি জেলে কয়েদি ছিলেন আতিক। ‘দৈনিক ভাস্কর’ এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে আতিককে বরৌলির জেল থেকে প্রয়াগরাজে নিয়ে আসা হয়েছিল। প্রয়াগরাজ আসার পর এক রাত আতিক পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই তাঁর বাড়িতে কাটান।

পরের দিন সকালে আতিককে নাইনি সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় জেলের সুপার ছিলেন এইচবি সিংহ। তিনি জানান যে, আতিক বার বার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন। কিন্তু সুপার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে রাজি ছিলেন না। এইচবি সিংহ জানান যে, বার বার বারণ করা সত্ত্বেও তাঁর দফতরে সামনে চলে আসেন আতিক। দরজায় দাঁড়িয়ে পুলিশ সুপারকে সম্বোধন করে সোজা দফতরের ভিতর প্রবেশ করেন আতিক। এমনটাই দাবি করেন এইচবি সিংহ। সুপার তখন সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে ব্যস্ত ছিলেন।

Advertisement

দফতরের ভিতর প্রবেশ করে আতিক চেয়ার টেনে নিয়ে সুপারের সামনে বসে পড়েন। এইচবি সিংহকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘‘আপনি মনে হয় আমাকে চিনতে পারছেন না। আমি আতিক আহমেদ।’’ আতিকের কথা শুনে সুপার বলেন, ‘‘তোমাকে কে না চেনে! তোমার প্রতিটা পদক্ষেপ আমার নজরে রয়েছে।’’ সুপারের জবাব শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন আতিক। পাল্টা উত্তর দিয়ে বলেন, ‘‘এই মাঠে আমি সবচেয়ে বড় খিলাড়ি। আমার মুখের বুলি থেকে গুলি বেশি চলে। প্রতিটি ব্যাপারে খুনখারাপি হয়ে যায়।’’ সুপার তাঁকে জানান যে, তিনি আতিকের ব্যাপারে সব কিছুই জানেন। এ বার আতিকের সময় হয়েছে সুপারের বিষয়ে জানবার। সুপারের মন্তব্য শুনে রেগে যান আতিক। আতিক চেঁচিয়ে বলেন, ‘‘আপনাকে তা হলে আলাদা করে সব বোঝাতে হবে?’’

আতিকের চেঁচামেচি এক ধমকে অবশ্য থামিয়ে দেন এইচবি সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘জেলের ভিতর যদি কোনও রকম গণ্ডগোল বাধাও, তা হলে তার ফল ভাল হবে না।’’ সেই মুহূর্তে তাঁর দফতরে এক পুলিশকর্মী প্রবেশ করেন এবং আতিককে তাঁর ব্যারাকে নিয়ে চলে যান। শনিবার রাতে পুলিশের চোখের সামনেই জেলবন্দি আতিক এবং তাঁর ভাই আশরফকে হত্যা করা হয়। দুই জেলবন্দিকে হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। হাতকড়া পরা অবস্থাতেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন আতিক। সেই সময় আচমকা গুলি চলে। গুলির আঘাতে আতিক এবং আশরফ দু’জনেই মারা যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement