সাংবাদিক সেজে কী ভাবে আতিক-হত্যার ছক? ফাঁস করলেন ঘাতকরাই। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াত ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদের সাংবাদিকবেশী তিন ঘাতকই তাঁদের খুনের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন। সূত্রের খবর, রবিবার পুলিশি জেরায় তাঁরা স্বীকার করেছেন, আতিক এবং তাঁর ভাই আশরফকে খুন করার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই নিয়েছিলেন তাঁরা। সেই উদ্দেশেই নকল প্রেস কার্ড তৈরি করেছিলেন তাঁরা। হাতে বুম এবং ক্যামেরা নিয়ে অন্য সাংবাদিকদের ভিড়ে মিশে গিয়েছিলেন ওই তিন জনও। এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর পর তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও, নিরাপত্তাক দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে সূত্রের খবর। প্রয়াগরাজের বেশ কিছু জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট পাঠিয়েছ রাজ্য প্রশাসন।
তিন ঘাতক লভলেশ তিওয়ারি, সানি এবং অরুণ মৌর্য সকাল থেকেই আতিক এবং আশরফের সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা আগে থেকেই জানতেন রবিবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে থাকা আতিক এবং তাঁর ভাইকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য প্রয়াগরাজের মতিলাল নেহরু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সকাল থেকেই আতিকদের গতিবিধির উপর নজর রাখছিলেন ওই তিন জন। পুলিশি জেরার মুখে তিন ঘাতক জানিয়েছেন, আতিককে মেরে অপরাধের দুনিয়ায় বিখ্যাত হতে চেয়েছিলেন তাঁরা।
শনিবার রাতে আতিককে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। রাত ১০টার পর হাসপাতালে যাওয়ার সময়েই তাঁর উপর হামলা হয়। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই আতিক এবং তাঁর ভাই আশরফকে লক্ষ্য করে গুলি চালান সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আসা আততায়ীরা। তাঁরা চিৎকার করে স্লোগানও দেন। ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য।
ঘটনার সময় হাসপাতালের সামনেই ছিলেন আতিকের আইনজীবী বিজয়। সাংবাদিকরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। বিজয় ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ ওদের গাড়ি থেকে নামিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। যেই ওরা হাসপাতাল চত্বরে ঢোকেন, গুলির শব্দ শোনা যায়। বিধায়ক এবং তাঁর ভাইয়ের গায়ে গুলি লাগে। ওখানেই ওঁদের মৃত্যু হয়।’’ এই ঘটনার পরেই উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন বিরোধী দল। মুখ খুলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী এবং অখিলেশ সিংহ যাদবও। কিছু দিন পুলিশের সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ মৃত্যু হয় উমেশ পাল হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আতিক-পুত্র আসাদের।