সুদীপ্ত সেন। —ফাইল চিত্র।
প্রায় এক যুগ বন্দি থাকার পরে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের জামিনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সুদীপ্ত সেনের আর্জিপত্রের মামলায় বৃহস্পতিবার রাজ্য কলকাতা হাই কোর্টে জানিয়েছে, রাজ্য পুলিশের ২২টি মামলায় এখনও সুদীপ্তর জামিন হয়নি। তবে অন্য রাজ্যে সুদীপ্তর নামে ১৭টি প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট বকেয়া আছে। বালুরঘাটেও একটি মামলা আছে। তারপরেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বালুরঘাটের কোর্টে সুদীপ্তকে সশরীরে অথবা ভার্চুয়ালি হাজির করা যাবে। ১৭টি প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের ক্ষেত্রে সুদীপ্ত আইনি পদক্ষেপ করতে পারবেন। চার সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে। সিবিআইকে তাদের মামলাগুলি নিয়ে বিস্তারিত জানাতে হবে।
এই নির্দেশের পরে আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, সারদার মূল মামলাগুলি সিবিআইয়ের হাতে ছিল। সেগুলিতে সুদীপ্ত জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তাই বাকি মামলাগুলিতেও তাঁর জামিনের পথ খোলা থাকছে।
সারদার তদন্ত ও বিচার হচ্ছে না, এই অভিযোগে সংশোধনাগার থেকে বন্দি হিসেবে হাই কোর্টে আর্জিপত্র (প্রিজ়নার্স পিটিশন) দাখিল করেছিলেন সুদীপ্ত সেন। তার পরেই এ ব্যাপারে হাই কোর্ট রাজ্য এবং সিবিআইয়ের রিপোর্ট চায়। এ দিন সুদীপ্তর আইনজীবী জানান যে, সিবিআইয়ের পাশাপাশি রাজ্য সারদা নিয়ে তদন্ত করছে। প্রায় ১২ বছর পরে বালুরঘাটে নতুন মামলা শুরু হয়েছে। সিবিআইয়ের পাশাপাশি রাজ্য একই বিষয়ে তদন্ত করতে পারে না। আদালতের প্রশ্নের উত্তরে এ দিন সিবিআই জানায়, তারা সারদা সংক্রান্ত মোট ৭৬টি মামলার তদন্ত করেছে।
২০১৩ সালে সারদা অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারি সামনে আসে। তা নিয়ে হইচই শুরু হয়। তারপর একের পর এক বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারিও সামনে আসতে থাকে। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে তদন্তভার দেয়। সুদীপ্ত সেন এবং সারদার অন্যতম কর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে রাজ্য পুলিশ ২০১৩ সালে গ্রেফতার করেছিল। পরে সিবিআই ও ইডি-র হাতে শাসক দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি গ্রেফতার হন। তাঁরা জামিন পেলেও সুদীপ্ত-দেবযানী এখনও বন্দি। তদন্ত শেষে সারদা মামলার বিচার এক যুগ পরেও শুরু হয়নি।