Jammu and Kashmir Terror Attack

‘প্রাণপণে কলমা পড়ছিলাম, পাশের জনকে গুলি করে চলে গেল জঙ্গি!’ বেঁচে আছেন, বিশ্বাস হচ্ছে না অধ্যাপক দেবাশিসের

পরিবার নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন দেবাশিস। মঙ্গলবার পহেলগাঁওতে ছিলেন। জঙ্গি হামলার সময়ে তিনি কলমা পড়ছিলেন। সাক্ষাৎকারে সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৪২
Assam professor recites Kalima and survived attack in Pahalgam

পহেলগাঁও থেকে বেঁচে ফেরা অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

তেড়ে এসেছিল বন্দুকধারী জঙ্গি। বেঁচে থাকবেন, আশাই করেননি অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য। চোখের সামনে তিনি পাশের পর্যটককে মরতে দেখেছেন। নিজে বেঁচে গিয়েছেন কেবল উপস্থিত বুদ্ধি আর কপালের জোরে। জঙ্গিকে আসতে দেখেই তিনি কলমা পড়তে শুরু করেছিলেন। তার ফলে তাঁকে গুলি করা হয়নি বলে মনে করছেন। জঙ্গি চলে যেতেই পরিবার নিয়ে পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন দেবাশিস।

Advertisement

পরিবার নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন দেবাশিস। মঙ্গলবার পহেলগাঁওতে ছিলেন। নিউজ় ১৮-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জঙ্গি হামলার মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, তাঁর পাশে গাছের নীচে শুয়ে কয়েক জন কলমা পড়ছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে শুনে শুনে তিনিও কলমা পাঠ করতে শুরু করেন। দেবাশিসের ধারণা, সেই কলমাই তাঁকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পাশের গাছের তলায় দাঁড়িয়ে অনেকে বিড়বিড় করে কলমা পড়ছিলেন। আমি তাঁদের দেখাদেখি সহজাত ভাবেই কলমা পড়তে শুরু করি। কিছু ক্ষণের মধ্যে এক জঙ্গি আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। আমার পাশে যিনি ছিলেন, সরাসরি তাঁর মাথায় গুলি করে।’’ এর পর দেবাশিসের দিকে তাকায় সেই জঙ্গি। তাঁর কথায়, ‘‘সোজাসুজি আমার দিকে তাকিয়ে ও জিজ্ঞেস করল, ‘কী করছ?’ আমি তখন আরও জোরে জোরে কলমা পড়তে শুরু করে দিয়েছিলাম। আমি জানি না, কী ভেবে আমি এটা করলাম। এর পর ওই জঙ্গি মুখ ফিরিয়ে চলে গেল।’’

দেবাশিস জানিয়েছেন, জঙ্গি চলে যাওয়ার পর পরিবার নিয়ে উল্টো দিকে পাহাড়ি পথে হাঁটা শুরু করেন তিনি। প্রায় দু’ঘণ্টার জন্য ‘ট্রেক’ করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছোন। ঘোড়ার পায়ের ছাপ দেখে এই দু’ঘণ্টা হেঁটেছিলেন দেবাশিসেরা। পরে ঘোড়ার পিঠে চড়ে হোটেলে ফেরেন। দেবাশিস বলেছেন, ‘‘আমি যে এখনও বেঁচে আছি, সেটাই বিশ্বাস হচ্ছে না।’’

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার নিন্দা করেছে অসম সরকার। যাঁরা সেখানে আটকে পড়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছে সরকার। পহেলগাঁওয়ের হামলায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই পর্যটক। অভিযোগ, পর্যটকদের ধর্মীয় পরিচয় জেনে বেছে বেছে গুলি করা হয়েছে। একটি বিশেষ ধর্মের মানুষ ছাড়া কাউকে রেয়াত করা হয়নি। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার শাখা দ্য রেসিসট্যান্স ফোর্স (টিআরএফ) হামলার দায় স্বীকার করেছে। নিহতদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তিন জন রয়েছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন