(বাঁ দিকে) মুহাম্মদ ইউনূস, হিমন্ত বিশ্বশর্মা। —ফাইল চিত্র।
চিন সফরে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের করা মন্তব্য ভাল ভাবে নিচ্ছে না ভারত। কেন্দ্রের তরফে এখনও এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলা না-হলেও মুখ খুলেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ওই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে হিমন্ত সমাজমাধ্যমে লেখেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের এই ধরনের প্ররোচনামূলক মন্তব্যকে হালকা ভাবে নেওয়া হচ্ছে না।”
ইউনূসের ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হিমন্ত ‘চিকেন নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডরের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাকি ভারতের সংযোগের বিকল্প পথ তৈরির কথা বলেছেন। তিনি জানান, উত্তর-পূর্ব ভারতকে বাকি ভারতের বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি করিডর বরাবর তো বটেই, তার আশপাশ দিয়েও আরও নিবিড় রেল এবং সড়ক সংযোগের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহেই চার দিনের চিন সফরে গিয়েছিলেন ইউনূস। সেখানে গিয়ে তিনি দেখা করেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। চিনকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করার আর্জি জানান তিনি। সেই সূত্রেই বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “সমুদ্রের (বঙ্গোপসাগর) একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।” চিন এবং বাংলাদেশ লাগোয়া উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি আরও বলেন যে, “ভারতের পূর্ব দিকের সাত রাজ্যকে বলা হয় সাত বোন। এগুলি স্থলভাগ দিয়ে ঘেরা। এদের সমুদ্রে পৌঁছোনোর কোনও পথ নেই।”
ভৌগোলিক এই অবস্থানের কারণে বঙ্গোপসাগরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত করার যে ‘বড় সুযোগ’ চিন পাবে, তা স্পষ্ট করেন ইউনূস। নিজের দেশে চিনা বিনিয়োগ আনতে ইউনূস কেন ভারতের প্রসঙ্গ তুলে আনলেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
প্রসঙ্গত, আকৃতিগত সাদৃশ্যের জন্য সরু শিলিগুড়ি করিডরকে ‘চিকেন নেক’ বলা হয়ে থাকে। উত্তরবঙ্গে অবস্থিত এই ‘চিকেন নেক’-এর দৈর্ঘ্য মাত্র ২০ কিলোমিটার। এই করিডরের মাধ্যমেই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে যাওয়া যায়। এই করিডরের এক দিকে রয়েছে নেপাল, আর এক দিকে বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ এই ‘চিকেন নেক’ থেকে ভুটান এবং চিনও খুব দূরে নয়।