‘মহল্লা ক্লিনিক’। —ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পাড়ায় পাড়ায় মহল্লা ক্লিনিক খুলেছিল দিল্লির শাসকদল আম আদমি পার্টি। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, দশ বছরের মাথায় অধিকাংশ মহল্লা ক্লিনিক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কোথাও চিকিৎসক নেই, তো কোথাও ওষুধ নেই। মহল্লা ক্লিনিকগুলি নিয়ে সমীক্ষা চালানো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে বিরোধীদের সুরেই বলেছে, গোটা দিল্লিতে হাজারটি মহল্লা ক্লিনিক খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচশোর কাছাকাছি ক্লিনিক খুলতে পেরেছিল আপ সরকার। তার ২৫-৩০ শতাংশই এখন বন্ধ। আপের দাবি, অভিযোগ ভিত্তিহীন।
দশ বছর আগে ক্ষমতায় এসে সরকারি হাসপাতালগুলির চাপ কমিয়ে ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির শোষণ রুখে দৈনন্দিন চিকিৎসা নিখরচায় করার লক্ষ্যে মহল্লা ক্লিনিক খোলা শুরু করে আপ সরকার। শেষ পর্যন্ত ৫৪৬টি মহল্লা ক্লিনিক খোলা গিয়েছিল। গেরুয়া শিবির-ঘেঁষা ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রাক্তন আমলা এ কে মলহোত্র দাবি করেন, ‘‘সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ স্থানে চিকিৎসকের অভাব। কোথাও কম্পাউন্ডার বা স্বাস্থ্যকর্মী নেই। কোথাও ওষুধ নেই।’’ সংগঠনটির আরও দাবি, অধিকাংশ মহল্লা ক্লিনিকের সামনে ময়লার স্তূপ। কোথাও বন্ধ ক্লিনিক মালের গুদাম, কোথাও মাদকাসক্তদের আখড়া। সংগঠনটির তরফে দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এস কে ধিংড়া বলেন, ‘‘প্রকল্পটি চালিয়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ আপ সরকার।’’ তথ্যের অধিকার আইনে পাওয়া তথ্যানুযায়ীও, ২০১৯ ও ২০২৩ সালে যেখানে যথাক্রমে ২.৪২ কোটি এবং ১.৯৪ কোটি রোগী চিকিৎসা করাতে মহল্লা ক্লিনিকে গিয়েছিলেন, সেখানে ২০২৪ সালে যান ১.৩৯ কোটি।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, গোড়া থেকেই মহল্লা ক্লিনিক আপ নেতাদের স্বজনপোষণের আখড়া হয়ে উঠেছিল। দিল্লির প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের মেয়ে সৌম্যাকে ওই প্রকল্পের সর্বেসর্বা করা হয়েছিল। বিতর্কের মুখে ইস্তফা দেন সৌম্যা। বিরোধীদের অভিযোগ, চিকিৎসকের অভাব, সময় মতো টাকা না পেয়ে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়াও ক্লিনিক বন্ধের কারণ। আপ নেতা সন্দীপ পাঠক পাল্টা বলেন, ‘‘আসলে বিজেপি ক্ষমতায় এসে মহল্লা ক্লিনিক বন্ধ করতে চায়। বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবসা বাড়ানোই বিজেপির লক্ষ্য।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ভারতের রাজনীতিতে মহল্লা ক্লিনিক এমন একটি যুগান্তকারী প্রকল্প, যার প্রশংসা রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন মহাসচিব কোফি আন্নানও করেছেন।’’