করমর্দনরত তুলসী গ্যাবার্ড (বাঁ দিকে) এবং নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এক্স হ্যান্ডল থেকে নেওয়া।
আমেরিকার মাটিতে খলিস্তানপন্থীদের তৎপরতা ঘিরে বিতর্কের আবহেই সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন আমেরিকার গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড। দিল্লিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজ়েনটেটিভস-এ নির্বাচিত প্রথম হিন্দু সদস্য গ্যাবার্ডের হাতে পিতলের কলসে প্রয়াগরাজের পূর্ণকুম্ভের জল তুলে দেন মোদী।
সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উদদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও বৈঠক করেন গ্যাবার্ড। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, নিষিদ্ধ খলিস্তানপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) এবং তার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান গুরপতয়ন্ত সিংহ পন্নুনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য আমেরিকার গোয়েন্দাপ্রধানের কাছে দাবি জানিয়েছেন রাজনাথ। সেই সঙ্গে আমেরিকার মাটিতে খলিস্তানপন্থীদের তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, সন্ত্রাস দমন, সাইবার নিরাপত্তা, নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সুরক্ষা বিষয়ক অংশীদারি নিয়ে আলোচনা করেছেন মোদী-গ্যাবার্ড। তবে খলিস্তান প্রসঙ্গ উহ্য রয়েছে। প্রসঙ্গত, জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন খলিস্তান নিয়ে একাধিক বার নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। পন্নুনকে হত্যার চেষ্টার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছর নিখিল গুপ্ত নামে এক ভারতীয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল মার্কিন প্রশাসন। চেক প্রজাতন্ত্র থেকে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হয়েছিল আমেরিকায়। এমনকি, ওই ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গত সেপ্টেম্বরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে তলব করেছিল আমেরিকার আদালত।
খলিস্তান প্রসঙ্গের পাশাপাশি, ডোভাল এবং রাজনাথের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের গোয়েন্দাপ্রধানের বৈঠকে অবৈধ অভিবাসন, মাদক বিরোধিতা, সীমান্ত নিরাপত্তা, গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা, যৌনশোষণ রোধ, মানব পাচার, সাইবার নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলি এসেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, ট্রাম্প দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম কোনও শীর্ষস্থানীয় মার্কিন আধিকারিক ভারত সফরে এলেন। আড়াই দিনের এই সফরে দিল্লিতে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বৈঠকে যোগদানের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত সম্পর্কে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন গ্যাবার্ড। এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনা উদ্বেগজনক। তিনি বলেন ‘‘বাংলাদেশ পরিস্থিতি, পশ্চিম এশিয়া এমনকি, ইয়েমেনের হুথি জঙ্গিদের তৎপরতারও প্রভাব পড়তে পারে ভারতে। তাই আন্তর্জাতিক সমস্ত বিষয়ই আমাদের আলোচনার তালিকায় রয়েছে।’’