Allahabad High Court

নিম্ন আদালতের বিচারকেরা মাঝেমধ্যে ‘উন্নতি’র জন্য নির্দোষদেরও দোষী করে দেন: ইলাহাবাদ হাই কোর্ট

২০০৯ সালের মামলা। ২০১০ সালে নিম্ন আদালতে খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন অভিযুক্ত। প্রায় ১৩ বছর জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি। সম্প্রতি ইলাহাবাদ হাই কোর্ট অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২৯
খুনের মামলায় নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস করল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট।

খুনের মামলায় নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস করল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। — প্রতীকী চিত্র।

ফৌজদারি মামলায় ভুলবশত দোষী সাব্যস্ত হওয়া আসামিদের ক্ষতিপূরণের জন্য আইন চালু করা প্রয়োজন। এমনটাই মত ইলাহাবাদ হাই কোর্টের। পাশাপাশি, নিম্ন আদালতের ভূমিকা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। হাই কোর্ট জানিয়েছে, শুধুমাত্র সুনাম রক্ষার জন্য কিংবা ‘উন্নতি’ (পেশাগত)-র পথ খোলা রাখার জন্য নিম্ন আদালতের বিচারকেরা কখনও কখনও নির্দোষ ব্যক্তিদের দোষী সাব্যস্ত করে দেন। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।

Advertisement

‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাই কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, উচ্চতর আদালতের ভয়ে ঘৃণ্য অপরাধের মামলায় মাঝেমধ্যেই অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে দেয় নিম্ন আদালত। অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্ত যে নির্দোষ, তা স্পষ্ট হওয়ার পরেও এটি করা হয়। এই ধরনের মামলায় তাঁরা হাই কোর্টের কোপের মুখে পড়াকে ভয় পান। শুধুমাত্র নিজেদের ব্যক্তি সুনাম এবং সম্ভাবনাময় (পেশাগত) দিকের কথা ভেবে এই ধরনের রায় দেওয়া হয়।

একটি খুনের মামলার শুনানি চলছিল কর্নাটক হাই কোর্টে। ২০০৯ সালে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল স্বামীর বিরুদ্ধে। ওই মামলায় ২০১০ সালে নিম্ন আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। গত সপ্তাহেই ওই মামলায় রায় জানিয়েছে হাই কোর্ট। অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে বিচারপতি সিদ্ধার্থ এবং বিচারপতি সৈয়দ কামার হাসান রি়জ়ভির বেঞ্চ। হাই কোর্টের মন্তব্য, এই ঘটনার জন্য ওই ব্যক্তির মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ হওয়া পাওয়া উচিত। কিন্তু যথাযথ আইনি পরিকাঠামো না থাকার কারণে তা সম্ভব নয়।

২০০৯ সালে যখন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রথম যে মামলা দায়ের হয়েছিল, তাতে স্ত্রীর বাপের বাড়ি থেকে পণ চাওয়া এবং তাঁর উপর অত্যাচারের অভিযোগ ছিল। অভিযোগ ছিল, সেই অত্যাচারের জন্য স্ত্রী এবং গর্ভস্থ ভ্রূণের মৃত্যু হয়। সাবেক ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৬ ধারায় মামলা চলছিল। পরে নিম্ন আদালত ৩০২ ধারায় খুনের মামলা যুক্ত করেছিল। তবে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পণের জন্য অত্যাচার বা সেই কারণে মৃত্যুর মামলাই নিম্ন আদালতে প্রমাণ করতে পারেননি সরকারি আইনজীবী। তার পরেও নিম্ন আদালত রায় দানের সময় খুনের ধারা যুক্ত করেছিল। এমনকি, খুনের ধারা যুক্ত হওয়ার পর অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি বলে মনে করছে হাই কোর্ট।

ইলাহাবাদ হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, শুনানির যে কোনও পর্যায়ে ধারা পরিবর্তন হতেই পারে। কিন্তু এই মামলাটির ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের উচিত ছিল, অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ঠিকঠাক সুযোগ দেওয়া।

আরও পড়ুন
Advertisement