রাতের শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা পরীক্ষায় সাদা পোশাকে এসিপি সুকন্যা। ছবি: সংগৃহীত।
রাতের শহরে নারীরা কি সুরক্ষিত? কতটা সুরক্ষিত? মহিলারা বিপদে পড়লে পুলিশ কি কোনও রকম সহায়তা করে? না কি সেই নিরাপত্তাটুকুও পান না মহিলারা! তাই নিজে এক জন মহিলা হিসাবে, পাশাপাশি এক জন আইপিএস আধিকারিক হিসাবে মহিলাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরখ করতেই পর্যটক সেজে রাতের শহরে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের আগরার অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (এসিপি) সুকন্যা শর্মা।
যে শহরের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁর উপরেও বর্তায়, সেই নিরাপত্তায় কোনও খামতি কি চোখে পড়েছে তাঁর? রাতের শহরে একা বেরিয়ে কী অভিজ্ঞতা হল এসিপি সুকন্যার?
তখন প্রায় মাঝরাত। সফর শুরুর জায়গা হিসাবে আগরা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন চত্বর বেছে নেন এসিপি সুকন্যা। স্টেশনের বাইরে একা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। সেখান থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরখ শুরু হয় তাঁর। ফোন করেন শহরের পুলিশ কন্ট্রোলরুমে। পুলিশকে তিনি জানান, রাস্তায় তিনি একা দাঁড়িয়ে আছেন। কোনও গাড়ি, অটো পাচ্ছেন না। তাঁর খুব ভয় লাগছে। নিজের পরিস্থিতি জানিয়ে পুলিশের সাহায্য চান তিনি। কন্ট্রোলরুম থেকে এসিপি সুকন্যার কাছে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সুকন্যার কাছে একটি ফোন আসে রাস্তায় টহলরত মহিলা পুলিশদলের কাছে থেকে। এসিপিকে জানানো হয়, যেখানে আছেন সেখানেই যেন তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য টহলরত পুলিশের ওই দল তাঁকে নিতে আসছে। এ কথা শোনার পরই নিজের পরিচয় দিয়ে এসিপি সুকন্যা পুলিশদলটিকে জানান, তিনি পরীক্ষা করে দেখছিলেন যে, কোনও মহিলা বা যে কেউ রাতে বিপদে পড়লে, পুলিশের সাহায্য চাইলে পাওয়া যায় কি না! তবে এ ক্ষেত্রে সেই পরীক্ষায় পাশ করে যায় পুলিশ।
তার পর এসিপি একটি অটো ধরেন। নিজের পরিচয় গোপন রেখেই অটোচালকের কাছে শহরে মহিলাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে দু’-এক কথা জানতে চান। কথা বলতে বলতেই নিজের গন্তব্যে পৌঁছন এসিপি। সেখানে পৌঁছে নিজের পরিচয় খোলসা করতেই অটোচালক স্তম্ভিত হয়ে যান। তবে এসিপির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। শুধু অটোচালকই নন, এসিপির এই উদ্যোগ প্রকাশ্যে আসতেই শহরে তাঁর প্রশংসায় চর্চাও শুরু হয়ে গিয়েছে।