(বাঁ দিকে) অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং অমিত শাহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গত কাল নরেন্দ্র মোদীর পরে এ বার অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে আক্রমণ শানালেন অমিত শাহ। আজ দিল্লিতে মহিলাদের আবাসন প্রকল্প উদ্বোধনে গিয়ে শাহ বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার আগে কেজরীওয়াল বলেছিলেন সরকারি বাংলো পর্যন্ত নেবেন না। আর ক্ষমতায় এসে নিজের সরকারি আবাস সাজাতে বিপুল অর্থ নয়ছয় করেছেন।’’ সরকারি টাকা খরচ করে সংস্কার করানোর জন্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাংলোকে ‘শিসমহল’ বলে কটাক্ষ করে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধীরা।
আগামী সপ্তাহেই ভোট ঘোষণা হওয়ার কথা দিল্লিতে। তার আগে সেখানে যাবতীয় উদ্বোধন সেরে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছেন মোদী-শাহেরা। আজ প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের নামে দিল্লির মোতিবাগে রোজগেরে মহিলাদের জন্য একটি হস্টেলের উদ্বোধন করেন শাহ। সেই অনুষ্ঠানে শাহ বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমি দিল্লির কিছু পড়ুয়াকে প্রশ্ন করেছিলাম যে, অরবিন্দ কেজরীওয়াল দিল্লির জন্য কী করেছেন? এক পড়ুয়া আমায় জানায়, কেজরীওয়াল নিজের জন্য শিসমহল বানিয়েছেন! অথচ এই কেজরীওয়াল ক্ষমতায় আসার আগে দাবি করেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে সরকারি বাংলো পর্যন্ত নেবেন না।’’
গত দশ বছর ধরে দিল্লি শাসন করছে আম আদমি পার্টি। কেজরীওয়ালের জনমোহিনী নীতির কারণে বাজেট উদ্বৃত্ত দিল্লি এখন রাজস্ব ঘাটতিতে চলছে বলে আজ দাবি করেন বিজেপি সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদী। তাঁর দাবি, ২০১৪-১৫ সালে আপ ক্ষমতায় আসার সময়ে খরচের চেয়ে আয় ছিল প্রায় দেড় গুণ বেশি। দিল্লিকে ধরা হত আর্থিক ভাবে উন্নত রাজ্য। কিন্তু সরকারের ভুল আর্থিক নীতির কারণে এখন রাজস্ব ঘাটতির পথে এগোচ্ছে দিল্লির অর্থনীতি। বাড়ছে ঋণের পরিমাণ। যা মেটাতে সম্প্রতি দশ হাজার কোটি টাকা ধার নিয়েছে আপ সরকার।
পাল্টা আপ নেতৃত্বের দাবি, এ সব অর্থহীন দাবি। গত দশ বছরে দিল্লি সরকারের একাধিক নীতির ফলে মানুষের আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে। আমজনতার হাতে অর্থ এসেছে। ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে জনতার। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। বরং দিল্লির উন্নয়ন খাতে কেন্দ্রের যে পরিমাণ বিনিয়োগ করার কথা ছিল, তা তারা করেনি।
আপ নেতৃত্ব ভাল করেই জানেন যে, দিল্লিতে বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার অর্থ হল, গেরুয়া শিবিরকে সুবিধে করে দেওয়া। তাই লোকসভা ভোটে একজোট হয়ে লড়েছিল কংগ্রেস ও আপ। যদিও তাতে বিজেপির জয়রথ থামেনি। আগের দু’টি লোকসভার মতোই এ বারেও দিল্লির সাতটি লোকসভাই জেতে তারা। এখন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন রুখতে কংগ্রেসকে আজ বিজেপির ‘বি টিম’ বলে আক্রমণ শানালেন কেজরীওয়াল। আজ তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস ও বিজেপি— দু’শিবিরের লক্ষ্য আপ-কে হারানো। কংগ্রেস ও বিজেপি যে একজোট হয়ে লড়ছে, সেই ঘোষণা ওঁদের করে দেওয়া উচিত।’’ কেজরীর মতে, কংগ্রেসের উচিত নিজস্ব অবস্থান নেওয়া। বিজেপির দেখানো পথে চলায় তাদের এখন আর কেউ গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। আজ আপ-শাসিত পঞ্জাবের কিছু মহিলা সে রাজ্যের সরকারের ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না মেটানোর প্রতিবাদে কেজরীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। এ প্রসঙ্গে কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘এরা কেউ পঞ্জাবের নন। কংগ্রেস ও বিজেপির সমর্থক। আপ পঞ্জাবে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পালন করে চলেছে।’’