দিল্লি পুলিশের জালে অভিযুক্ত। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দিল্লির এমসে মহিলা চিকিৎসকদের হস্টেলে চুরির ঘটনায় পুলিশ এক মহিলাকে গ্রেফতার করল। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৪৩ বছর বয়সি ওই মহিলার এক অদ্ভুত আসক্তি রয়েছে। সোনার গহনা দেখলে তিনি লোভ সামলাতে পারেন না! অতীতেও বেশ কয়েক বার সোনার গহনা চুরি করার ইতিহাস রয়েছে তাঁর।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত মহিলা নিরক্ষর নন। মেডিক্যাল ল্যাব টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা করেছেন। একই সঙ্গে বিজ্ঞানে স্নাতকও! ছোট থেকেই সোনার অলঙ্কারের প্রতি তাঁর ভালবাসা ছিল। কিন্তু অর্থের অভাবে কখনই পছন্দমতো গয়না কিনতে পারেননি। সেই থেকে তাঁর মধ্যে চুরির প্রবৃত্তি দেখা দেয়। গত ২৭ মার্চ এমসের এক মহিলা চিকিৎসক দেখেন তাঁর হস্টেলের ঘর থেকে সোনার অলঙ্কার এবং নগদ চুরি গিয়েছে। দু’টি সোনার হার, একটি সোনার আংটি, এক জোড়া সোনার দুল, একটি সোনার ব্রেসলেট এবং নগদ সাড়ে চার হাজার টাকা চুরি যায় ওই চিকিৎসকের। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি হস্টেল কর্তৃপক্ষকে জানান এবং পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ এই চুরির ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। হাসপাতাল এবং হস্টেল চত্বরের প্রায় ১০০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হয়। ওই সিসিটিভি ফুটেজে একজন সন্দেহভাজন মহিলাকে দেখা যায়। চিকিৎসকেরা যখন ডিউটিতে চলে যান, তখন তাঁকে হস্টেলের করিডরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় ফুটেজে। মহিলার পরনে ছিল ডাক্তারি অ্যাপ্রন। ওই মহিলা হস্টেলের বেশ কয়েকটি ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করেন।
হাসপাতাল প্রাঙ্গণের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে ওই মহিলা একটি স্কুটারে করে এসেছিলেন। সেই স্কুটারের নম্বর প্লেট খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। তার পর সেটি ট্র্যাক করে ওই মহিলার সন্ধান পান। গাজ়িয়াবাদের একটি ঠিকানায় ওই নম্বরের স্কুটারটির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে হানা দিয়েই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জেরার মুখে ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি গয়না পরতে ভালবাসেন। কিন্তু গয়না কেনার মতো সামর্থ্য নেই তাঁর। সেই কারণেই চুরির পথ বেছে নিয়েছিলেন। অভিযুক্ত আরও জানিয়েছেন, তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ল্যাব সহকারী হিসাবে কাজ করেন। সেই সূত্রেই তিনি এমসে এসেছিলেন। সেখানকার মহিলা চিকিৎসকদের হস্টেলে গিয়ে দেখেন তাঁরা কেউই ডিউটিতে যাওয়ার সময় ঘরের দরজা বন্ধ করেন না। সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ওই মহিলা।