শুল্ক লড়াইয়ের আবহে আগামী সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে আসছেন আমেরিকার বাছাই করা বাণিজ্যপ্রতিনিধি দল। সরকারি সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা চড়া শুল্ক চাপানোর হুমকিকে প্রশমিত করতে ভারত ওই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বসে আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে কয়েকটি চিহ্নিত করবে। সেই পণ্যগুলিতে কর কম করার কথা ভাবা হবে। যাতে আমেরিকার সঙ্গে একটি ‘আগাম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি’ (আর্লি হারভেস্ট ডিল, যার পরবর্তী ধাপ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি) দ্রুত করা যায়, সে জন্য এই পদক্ষেপ বলে সরকারি সূত্রের খবর। আমেরিকার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে পারেন ব্রেন্ডান লিঞ্চ। লিঞ্চ বাণিজ্য চুক্তির দর কষাকষিতে সিদ্ধহস্ত। গত এক দশকে আমেরিকার হয়ে দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ায় অনেক চুক্তিই তিনি সই করাতে পেরেছেন। ২০০৩ সালে ভারত তাইল্যান্ডের সঙ্গে আম, আপেল, কিছু রাসায়নিকের ক্ষেত্রে এই আগাম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি করেছিল। বুধবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের বলেছেন, “২ এপ্রিল আমি ভারতের বিরুদ্ধে ততটাই শুল্ক আরোপ করব, যতটা ওরা আমাদের উপর করে।” নয়াদিল্লি জবাবে শুধু জানিয়েছে, দু’দেশের সরকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তির কাঠামো তৈরির জন্য সক্রিয় ভাবে কাজ করছে। যেটা মুখে স্বীকার করতে চাইছে না সাউথ ব্লক তা হল, ঘাড়ের কাছে চড়া শুল্কেরহুমকি নিয়ে কী ভাবে বাণিজ্য-বাধা দূর করা যাবে।
কিন্তু সূত্রের খবর, ভিতরে ভিতরে আমেরিকা থেকে আসা বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক কাটছাঁটের কথা ভাবা হচ্ছে। সূত্রের খবর, বাণিজ্য মন্ত্রকের কর্তারা এই ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু আইনি বাধা সরানোর জন্য কাজ শুরু করেছেন। যেমন বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা (ডবলিউটিও) তাদের কোনও সদস্যকে আলাদা করে বিশেষ দেশের জন্য শুল্ক ছাড়ের অনুমতি দেয় না, যতক্ষণ না অন্য সদস্যদেরও সেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। দু’টি দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি থাকলে তা করা যায়। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের যা নেই। কর্তারা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে একমাত্র উপায় দ্রুত দ্বিপাক্ষিক আগাম চুক্তি করে ফেলা। সে ক্ষেত্রে ডবলিউটিও-র নিষেধাজ্ঞা এড়ানো যাবে।
মার্চ মাস থেকে দু’পক্ষের ভিডিয়ো বৈঠক চলছে, তবে আমলা স্তরে মুখোমুখি কথা হবে এই প্রথম। সূত্রের খবর, এই আগাম চুক্তিতে মোটরবাইক, চার চাকার গাড়ি, জীবাশ্ম জ্বালানির মতো বিষয় রাখার জন্য চাপ দেবে ওয়াশিংটন। তবে গোটা বিষয়ে ভারতের কতটা লাভ হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলেই মনে করছেসংশ্লিষ্ট মহল।