ব্রিটেনের আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ফেরানো হল দেশে। রাখা হবে গুজরাতের জেলে। — প্রতীকী চিত্র।
খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ব্রিটেনের জেলে সাজা ভোগ করছিলেন গুজরাতের এক তরুণ। জিগুকুমার সোরথি নামে বছর সাতাশের ওই তরুণকে এ বার ফেরানো হল ভারতে। ব্রিটেনের আদালত তাঁকে ২৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। তার মধ্যে চার বছরের সাজা ইতিমধ্যে কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি সে দেশের জেলে। বাকি সাজা কাটাবেন এ দেশেই। গুজরাতের লাজপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বাকি ২৪ বছরের সাজা কাটাবেন অভিযুক্ত। ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে বন্দি হস্তান্তর চুক্তির মাধ্যমে তাঁকে ভারতীয় জেলে নিয়ে আসা হয়েছে।
হবু স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে জিগুকুমারের বিরুদ্ধে। পরে নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং দোষ স্বীকার করেন। খুনের মামলায় লিয়েস্টার সিটির এক আদালত দোষী সাব্যস্ত করে জিগুকুমারকে। ২০২০ সালে তাঁর সাজা ঘোষণা করা হয়। ২৮ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মতো এত দিন ব্রিটেনের এক জেলেই বন্দি ছিলেন তিনি। তাঁর বাবা-মা থাকেন গুজরাতে। তাঁরাই সরকারের কাছে আবেদন জানান, যাতে জিগুকুমারকে এ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই মতো দু’দেশের বন্দি হস্তান্তর চুক্তির মাধ্যমে জিগুকুমারকে এ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। চুক্তি অনুসারে, সাজার বাকি মেয়াদ (২৪ বছর) ভারতীয় জেলেই থাকতে হবে আসামিকে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত সোমবার ব্রিটেনের আধিকারিকদের একটি দল আসামিকে নিয়ে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছয়।
গুজরাতের সুরাত পুলিশের একটি দলের হাতে আসামিকে তুলে দেন ব্রিটেনের প্রতিনিধিরা। এর পর সুরাত পুলিশ মঙ্গলবার আসামিকে গুজরাতের লাজপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যায় এবং জেল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়।
২০০৫ সালে ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে বন্দি হস্তান্তর বিষয়ক চুক্তি হয়। চুক্তিতে বন্দি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্তের কথা উল্লেখ রয়েছে। বন্দিকে যে দেশের কাছে হস্তান্তর করা হবে, তাঁকে সেই দেশেরই নাগরিক হতে হবে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিদের এই চুক্তির আওতায় হস্তান্তর করা যাবে না। আদালত ইতিমধ্যে যে সাজা দিয়েছে, সেটিই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। আসামির বিরুদ্ধে অন্য কোনও মামলা বিচারাধীন থাকলে, সেই আসামি হস্তান্তরযোগ্য নয়। হস্তান্তরের আবেদনের সময়ে বন্দির অন্তত ছ’মাসের সাজা বাকি থাকতে হবে, কিংবা যাবজ্জীবন জেলের সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হতে হবে। সামরিক আইনে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের হস্তান্তরের জন্য আবেদন জানানো যাবে না। এমন আরও বেশ কিছু শর্তের কথা উল্লেখ রয়েছে চুক্তিতে।