রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি। ফাইল চিত্র।
তাঁকে প্রচারের দায়িত্ব দিয়ে হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা ভোটে সাফল্য পেয়েছে কংগ্রেস। এ রাজ্যের রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সির হাতে এ বার ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তুলে দিল এআইসিসি। দায়িত্ব পেয়েই বুধবার দীপা জানালেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বামেদের পাশাপাশি আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গেও কংগ্রেসের সমঝোতার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রিপুরার পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের অন্য দুই রাজ্য মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তিন রাজ্যেরই প্রার্থী বাছাই-সহ ভোটের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্তদের নাম এআইসিসির তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। ত্রিপুরায় দীপার নেতৃত্বাধীন প্রার্থী বাছাই কমিটির সদস্য হিসাবে রয়েছেন কমলেশ্বর পটেল ও সম্পত কুমার। এ ছাড়া এআইসিসির তরফে ওই রাজ্যের সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অজয় কুমার এবং জারিতা লইতথ্লং রয়েছেন কমিটিতে। দীপা বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই যে কোনও রাজ্যে কঠিন। কারণ তারা কেন্দ্রের শাসকদল। হিমাচলেও কঠিন লড়াই করেই আমাদের জয় পেতে হয়েছে। তবে ত্রিপুরায় যে ধরনের রাজনৈতিক সন্ত্রাস রয়েছে, তা হিমাচলে ছিল না। সেই সন্ত্রাসের কারণেই ত্রিপুরার লড়াই একটু বেশি কঠিন হিমাচলের তুলনায়। কারণ ত্রিপুরায় বিধানসভার উপনির্বাচনে গিয়ে দেখেছি কী ধরনের সন্ত্রাস হয় সেখানে।’’
আগরতলায় উপনির্বাচনে জয়ী কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মণের উপর হামলার কথাও মনে করিয়ে দেন ইউপিএ জমানার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্ত্রী দীপা। পাশাপাশি, বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে হারানোর জন্য বিরোধী জোটের সম্ভাবনার প্রসঙ্গ উস্কে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট-সহ ত্রিপুরার বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে সবই এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। জোট নিয়ে এখনই বলার মতো সময় আসেনি।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে এ ক্ষেত্রে ‘আঞ্চলিক দল’ বলতে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজপরিবারের বংশধর প্রদ্যোত বিক্রমমাণিক্য দেব বর্মণের নেতৃত্বাধীন তিপ্রা মথার কথা বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিজেপির প্রভাবশালী জনজাতি নেতা দিবাচন্দ্র রাঙ্খল বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দেবেন তিনি। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দিবাচন্দ্র ২০১৮-র বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ধলাই জেলার কমলছড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন।
২০২১ সাল থেকে এই নিয়ে বিজেপির ৫ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে দল ছাড়লেন। তাঁদের মধ্যে সুদীপ রায় বর্মণ, আশিস সাহা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বুর্বমোহন ত্রিপুরা যোগ দিয়েছেন বিরোধী জনজাতি দল তিপ্রা মথায়। আশিস দাস তৃণমূলে যোগ দিলেও পরবর্তী সময়ে জোড়াফুল শিবির ত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। এ ছাড়া বিজেপির জোটসঙ্গী জনজাতি দল আইপিএফটির দুই বিধায়কও ইস্তফা দিয়ে তিপ্রায় যোগ দিয়েছেন।