Gangrape

মা হল ধর্ষণে গর্ভবতী কিশোরী, সমাজের বিদ্রূপ উড়িয়ে সেই সন্তানকেই মানুষ করার যুদ্ধে উন্নাওয়ের পরিবার

১২ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৩ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন সন্ধ্যায় দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামেরই কয়েকজন যুবক কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
উন্নাও (উত্তরপ্রদেশ) শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:১৬
গণধর্ষণের সেই ঘটনার আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে না আসতেই কিশোরী এবং তার পরিবারের জীবনে এটা ছিল আরও এক ধাক্কা। প্রতীকী ছবি।

গণধর্ষণের সেই ঘটনার আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে না আসতেই কিশোরী এবং তার পরিবারের জীবনে এটা ছিল আরও এক ধাক্কা। প্রতীকী ছবি।

সময় যত এগিয়েছে, ততই শারীরিক পরিবর্তন স্পষ্ট হয়েছে সবার কাছে। তা দেখে পড়শিরা কটূক্তি করতে ছাড়েননি। কিশোরীর শরীরের দিকে এমন ভাবে তাকাতেন তাঁরা, ‘যেন দোষটা ওরই’! সংবাদমাধ্যমকে এ কথা বলছিলেন উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের এক ধর্ষিত কিশোরীর মা।

১২ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল গত ফেব্রুয়ারি মাসের তেরো তারিখ। ওই দিন সন্ধ্যায় দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামেরই কয়েকজন যুবক কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। গর্ভবতী হয়ে পড়ে কিশোরী। আট মাস পর সন্তানের জন্ম দিয়েছে সে। সেই সন্তানকেই এখন বড় করে তোলার, মানুষ করে তোলার লড়াই কিশোরীর পরিবারের সামনে। কিশোরীর মায়ের কথায়, “আমার মেয়ের বয়স ১২। এটা ওর খেলার বয়স। এ সবের ও কী জানে? আমাদেরই বাচ্চাটাকে বড় করে তুলতে হবে।”

Advertisement

কিশোরীর মা জানান, তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু সেই ঘটনায় মেয়ে যে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে সেটা আঁচ করতেই পারেনি তার পরিবার। কিশোরীর মা বলেন, “ঘটনার বেশ কিছু দিন পর মেয়ের পেটে হঠাৎ যন্ত্রণা শুরু হয়। গ্রামেরই এক চিকিৎসকের কাছ নিয়ে যাই। তিনি ওষুধও দেন। কিন্তু তাতেও ব্যথা না কমায় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে পরীক্ষার পর জানতে পারি যে, মেয়ে তিন মাসের গর্ভবতী।”

গণধর্ষণের সেই ঘটনার আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে না আসতেই কিশোরী এবং তার পরিবারের জীবনে এটা ছিল আরও এক ধাক্কা। কিশোরীর গর্ভপাত করানোর জন্য চিকিৎসকের কাছে ছুটে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি গর্ভপাত না করানোর পরামর্শ দেন। কেননা তাতে কিশোরীর মৃত্যু হতে পারত। তার পরই কিশোরীর সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।

কিশোরীর বাবার অভিযোগ, তিনি যখন মেয়ের গর্ভবতী হওয়ার কথা জানতে পারেন, তখন পুলিশের কাছে সাহায্যের আশায় ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কোনও কথা শোনেনি। টাকা নিয়ে মূল অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও বাবার অভিযোগ। তাঁর আরও অভিযোগ, গণধর্ষণের ঘটনায় পাঁচ জন জড়িত ছিলেন। কিন্তু পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল। ফাস্টট্র্যাক আদালতে সেই মামলা চলছে। ১৬৪ জনের বয়ান নিয়েছে পুলিশ। নির্যাতিত কিশোরীর বয়ানও নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement