Heart Health

কমবয়সিদের মধ্যে বাড়ছে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা, জীবনযাপন না কি পারিবারিক ইতিহাস, দায়ী কে?

আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করলেও, পরিবারের কারও যদি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ইতিহাস থাকে, তবে সাবধান হোন এখনই।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ১৩:১১
অল্পবয়সিদের মধ্যে হৃদ্‌রোগের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণই হল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন।

অল্পবয়সিদের মধ্যে হৃদ্‌রোগের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণই হল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। ছবি : সংগৃহীত

বছর ৪০-এর আদিত্য, একটি বহুজাতিক সংস্থায় উঁচু পদে কর্মরত। সপ্তাহে পাঁচ দিন, ১২ঘণ্টা বা অনেক সময়ই তার বেশিও থাকতে হয় অফিসে। সারা সপ্তাহ হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর দু’দিনের ছুটি, যা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে এবং সকলের অভাব-অভিযোগ মেটাতে গিয়েই চোখের সামনেই উবে যায়।

শরীরচর্চা বলতে সকালে উঠে অল্প-বিস্তর হাঁটাহাটি। ইচ্ছা থাকলেও এর বেশি কিছু করার উপায় থাকে না। অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান বা ধূমপান না করলেও একেবারে যে বাদ দিতে পেরেছেন, তা-ও নয়।

Advertisement

এক দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ করেই খেয়াল করলেন, বুকে চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে। আগের দিন রাতে বেশি খাওয়া হয়ে গিয়েছে বলে, সঙ্গে সঙ্গে একটা হজমের ওষুধও খেয়ে ফেলেছেন। কষ্ট কমার বদলে, সেই চিনচিনে ব্যথাই তখন বুকে চাপ ধরার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তত ক্ষণে আদিত্যর স্ত্রী বুঝতে পেরে গিয়েছেন ঘটনাপ্রবাহ। গাড়ি ডেকে, আদিত্যকে নিয়ে সোজা চলে গিয়েছেন হাসপাতালে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আদিত্যর ক্ষেত্রে যে বিষয়টি প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হল পারিবারিক ইতিহাস। আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করলেও আদিত্যর পরিবারের দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল ‘সাডেন কার্ডিয়্যাক অ্যারেস্ট’-এ।

ইদানীং অল্পবয়সিদের মধ্যে হৃদ্‌রোগের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণই হল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। বিশেষত যাঁদের রাতে ঘুম কম হয়, তাঁদের হৃদ‌্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বাইরের চেহারা যতই ঝকঝকে হোক না কেন, ভিতরে কোনও না কোনও সমস্যা থেকেই যায়।

পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কোনও ভাবেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কোনও ভাবেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ছবি : সংগৃহীত

চিকিৎসকদের মতে, কোনও একটা কারণ নয়, হার্ট অ্যাটাকের পিছনে অনেক কারণ থাকে। তবে মূল যে কারণগুলি বেশি প্রভাব ফেলে, তা হল—

১) মাদকাসক্তি

২) অতিরিক্ত ধূমপান

৩) উচ্চ রক্তচাপ

৪) উচ্চ কোলেস্টেরল

৫) শারীরিক সক্রিয়তার অভাব

৬) মধুমেহ রোগ

৭) ভুল খাদ্যাভ্যাস

পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কোনও ভাবেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে এই বিষয়ে সচেতন থাকলে, মৃত্যুর ঝুঁকি এড়িয়ে চলা যায়।

সচেতন থাকতে কী কী করবেন?

১) ১৮ বছরের পর থেকেই সতর্ক হতে হবে। বছরে এক বার এই সংক্রান্ত রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে।

২) দিনে অন্তত ৩০ মিনিট বা ১০ হাজার পা হাঁটার অভ্যাস গড়তে হবে।

৩) জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

৪) এ ছাড়াও পরিবারে কারও ডায়াবিটিসের ইতিহাস থাকলে, নরম পানীয় বন্ধ করতেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement