শীতকালে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ঝুঁকি বেশি কেন? ছবি: সংগৃহীত
শীতকাল এলেই তীব্রতা বাড়তে দেখা যায় বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগের। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, অস্থিসন্ধির ব্যথা, হাঁপানি প্রভৃতির মতো বেশ কিছু উপসর্গে কাবু হয়ে পড়েন অনেকেই। এমনই একটি সমস্যা হল উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। তাই শীতে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে উদ্বেগ বাড়ে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগা রোগীদের মধ্যে। কিন্তু জানেন কি, কেন এমন হয়?
শীতকালে পরিবেশের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে মানবদেহের শিরা ও ধমনীগুলি সংকুচিত হয়ে আসে। এর ফলে দেহের উষ্ণতা বজায় রাখা, রক্ত সঞ্চালন সঠিক রাখা এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সরবরাহ করতে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করতে হয় শরীরকে। আর এই কারণেই শীতকালে আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়ে যেতে পারে রক্তচাপ। রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া ডেকে আনে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা। বিশেষজ্ঞদের মতে ষাটোর্ধ্ব মানুষদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। পাশাপাশি শীতকালে শরীরচর্চার অভাব, অলসতা বৃদ্ধি প্রভৃতি কারণেও রক্তচাপ বাড়তে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই শীতকালে অতিরিক্ত মেদ জমে শরীরে, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এটিও। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে যোগাযোগ করা উচিত চিকিৎসকের সঙ্গে।
তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার সঙ্গে সঙ্গে কিছু ঘরোয়া টোটকাও কাজে আসতে পারে।
১। শীতকালে চাঙ্গা থাকতে অনেকেই অতিরিক্ত মদ্যপান করে থাকেন। কিন্তু এই সময় অতিরিক্ত মদ্যপান করলে শরীরের তাপমাত্রা আচমকাই কমে যেতে পারে। এর ফলে দেহের অভ্যন্তরীণ মূল তাপমাত্রা কমে যায়, আরও সংকুচিত হয় রক্তনালী। যার ফলে বৃদ্ধি পায় রক্তচাপ।
২। শীতকালে বারবার কফি খাওয়াও ডেকে আনতে পারে সমস্যা। রক্তচাপের সমস্যা থাকলে দিনে দু’বারের বেশি কফি না খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।
৩। শীত থেকে বাঁচতে অনেকেই ভারী শীতের পোশাক গায়ে চাপান। মনে রাখবেন, একটি মোটা শীতপোশাকের বদলে তুলনামূলক ভাবে পাতলা একাধিক পোশাক পরা শরীরের পক্ষে ভাল।
৪। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত উপযোগী সঠিক খাদ্যাভ্যাসও। শীতকালে রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে শীতকালীন বিভিন্ন শাক সব্জি খাওয়া যেতে পারে। শীতের বিভিন্ন ফল, অল্প স্নেহপদার্থ যুক্ত বা স্নেহ পদার্থহীন দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারেন।
৫। যাঁরা নিয়মিত শরীর চর্চা করেন, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তাদের এই সময়টুকু একটু অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। অযথা বাড়ির বাইরে গিয়ে শরীরচর্চা না করাই ভাল। খেয়াল রাখবেন যেন অতিরিক্ত পরিশ্রমে দেহের উপর চাপ না পড়ে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অতিরিক্ত শরীরচর্চার ফলে বাইরের তাপমাত্রা ও শরীরের অভ্যন্তরীণ গড় তাপমাত্রা মধ্যে আচমকাই ভারসাম্য হারিয়ে যায়, এই তারতম্য ডেকে আনতে পারে হৃদ্রোগের মতো বড় বিপদ।