পাতার গুণে শীতের মরসুমে দূরে থাকবে রোগবালাই! ছবি:ফ্রিপিক।
এ এক এমন পাতা, যা ছাড়া শুভকাজ অসম্পূর্ণ। বিয়ে হোক বা পুজোপার্বণ পাতাটি ছাড়া চলে না। ঠিকই ধরেছেন। পানপাতা। মুখের আদল বোঝাতেও যেমন এর ব্যবহার, তেমনই একসময়ে ঠোঁট রাঙাতেও নানা উপকরণে পান খাওয়ার চল ছিল। বাংলার সাহিত্যে, সংস্কৃতিতে, দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গেও পানের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গি। খাওয়ার শেষে এক খিলি পান মুখে দেওয়া ছিল রেওয়াজ।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই অভ্যাসে ইতি পড়েছে। এখন বিয়েবাড়িতে ভূরিভোজের পরে মুখশুদ্ধির জন্য কেউ কেউ পান চিবোন। কেউ আবার মাঝেমধ্যে দোকানে গিয়ে মিষ্টি পান কেনেন।
কিন্তু জানেন কি, পান নিছক পাতা নয়, বরং তাতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণও। ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম রয়েছে এতে। হজমেও সহায়ক।
আর কী উপকার হবে পানপাতা চিবোলে?
১. পানপাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি। সি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়াও এতে মেলে ক্যালশিয়াম এবং আয়রন। যা শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। শীতের দিনে বা মরসুম বদলের সময় অনেকেরই সর্দিকাশি হয়। নিয়মিত পান খেলে শরীর ভিটামিন সি, এ পাবে। ফলে ছোটখাটো সংক্রমণ ঠেকানো সহজ হবে।
২. পানের পরিচয় অবশ্য হজমিকারক হিসাবে। পানে থাকা উপাদান পাচকরস নিঃসরণে সাহায্য করে। সেই জন্য খাওয়ার পর পান চিবিয়ে খাওয়ার চল। পান চিবোতে থাকলে জিভ থেকে লালারসও বেশি নিঃসৃত হয় যা হজম করাতে সাহায্য করে। বিপাকহার বৃদ্ধিতেও সহায়ক পান। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
৩. পানে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল গুণ আছে যা ব্রণ, ফুস্কুড়ি সহজেই সারিয়ে তোলে। এ ছাড়াও ত্বকে কালো ছোপ হলে কয়েকটা পান পাতা আর কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে লাগাতে পারেন। সুফল মিলবে।
৪. অনেকেরই মুখে দুর্গন্ধ হয়। খাওয়ার পর পান যেমন মুখশুদ্ধির কাজ করে, তেমনই পানের গুণে মুখের দুর্গন্ধও দূর হতে পারে। এতে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল। যা মুখে হওয়া ছোটখাটো সংক্রমণ ঠেকাতেও সক্ষম। অনেক সময় এই কারণেও মুখে বিশ্রী গন্ধ হয়। জলে পানপাতা দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ফুটিয়ে কুলকুচি করলেও এ ক্ষেত্রে লাভ হবে।
তবে বেশি খয়ের বা মিষ্টি উপকরণ এবং নেশার দ্রব্য দিয়ে বার বার পান খেলে উপকার নয়, স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। ভাল বলেই তা প্রচুর পরিমাণে খাওয়া যায় না। বরং খাওয়ার পর বিশেষ কোনও উপকরণ না যোগ করেই শুধু একটি পানপাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। নিয়মিত পান খেতে চাইলে কটা খাবেন, কী ভাবে খাবেন, সে ব্যাপারে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন।