কাকে বলে অ্যাফাসিয়া? ছবি: সংগৃহীত
অ্যাফাসিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় অভিনয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ৬৭ বছর বয়সি হলিউড অভিনেতা ব্রুস উইলিস। সম্প্রতি তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে নেটমাধ্যমে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে এই সিদ্ধান্তের কথা। কিন্তু কী এই রোগ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এমন একটি সমস্যা যা মানুষের কথোপকথনের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। ফলে কথা বলতে ও বুঝতে সমস্যা হয় আক্রান্তের।
কেন হয় অ্যাফাসিয়া?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মস্তিষ্কের যে অংশের মাধ্যমে কথা বলার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হয় সেই অংশের ক্ষতির ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত মাথায় আঘাত ও স্ট্রোকের মতো রোগের পর মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলে রক্ত প্রবাহের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা এই রোগ ডেকে আনে। এ ছাড়াও মস্তিষ্কের টিউমার, স্নায়ুঘটিত রোগ ও মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের ফলে ধীরে ধীরে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন রোগী। তবে ব্রুসের ক্ষেত্রে ঠিক কেন এমন ঘটল তা খোলসা করেনি তাঁর পরিবার।
অ্যাফাসিয়ার লক্ষণ
অ্যাফাসিয়ার লক্ষণ ও তীব্রতা বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। তবে গুরুতর সমস্যা তৈরি হলে রোগীর সঙ্গে ভাব বিনিময় করা একেবারেই অসাধ্য হয়ে যায়। রোগ যখন অল্প থাকে তখন সাধারণত রোগী বিশেষ কোনও বস্তু বা ব্যক্তির নাম মনে করতে অসুবিধায় পড়েন। কেউ কেউ সঠিক ভাবে গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না। অর্থাৎ পরপর শব্দ বসিয়ে বাক্য গঠন করতে সমস্যা হয়। যেহেতু বয়স হলে অনেক সময় এমনিতেই এই ধরনের সমস্যা দেখা যায় তাই একে অনেকেই বয়সজনিত সমস্যা ভেবে ভুল করেন।
অ্যাফাসিয়ার কি চিকিৎসা সম্ভব?
দ্রুত চিহ্নিত করা গেলে ও বিশেষ কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব হতে পারে। অনেক সময় ভিটামিন বি১২-এর অভাব ও থাইরয়েডের সমস্যা থেকেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি স্ট্রোকের ফলে যখন এই সমস্যা দেখা যায় তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই রোগের নিরাময় সম্ভব। সাধারণত এই সময় চিকিৎসকরা ওষুধ ও স্পিচ থেরাপির মতো চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নেন। তবে স্ট্রোকের ২-৩ মাসের পরেও যদি সমস্যা থেকে যায় তবে নিরাময় সম্ভব না-ও হতে পারে। রোগ চিহ্নিত হওয়ার পর সাধারণত স্ক্যান করে দেখা হয় মস্তিষ্কে টিউমার বা সংক্রমণ রয়েছে কি না। অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়া থেকেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের সমস্যা থেকে রোগীর নিরাময় কঠিন।