ঠোঁটের ক্যানসারের জন্য প্রধানত দায়ী সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ। ছবি: শাটারস্টক
ত্বক ও চুলের যত্নের প্রতি কম-বেশি সবাই যত্নশীল হলেও ঠোঁটের প্রতি অবহেলার অন্ত নেই। তাই ঠোঁটের রং বদলে যাওয়া নিয়েও মাথাব্যথা নেই অনেকের। কিন্তু জানেন কি, ঠোঁটের রং বদলে যাওয়ার পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে বড় বিপদ? অনেকের ধারণা, ঠোঁট কালো হয়ে যাওয়ার পিছনে মূল কারণ হল ধূমপান। নিকোটিন এবং বেনজোপাইরিন ত্বকের মেলানিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে কালো হয়ে যেতে পারে ঠোঁট। এ বিষয়ে সতর্ক আর ক’জনই বা হয়ে থাকেন! কিন্তু এই একটাই কারণে নয়, ঠোঁটে কর্কট রোগ বাসা বাঁধলেও কিন্তু রং পাল্টে যেতে পারে। ঠোঁটের ক্যানসারের জন্য প্রধানত দায়ী সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ। যাঁরা দিনের বেশির ভাগ সময়টা রোদে রোদে কাটান, তাঁদের ঠোঁটের ক্যানসারের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তা ছাড়া, তামাক ও মদের আসক্তি থাকলেও ঠোঁটের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের আক্রমণে এই রোগ হতে পারে।
কোন কোন লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হবেন?
১) ঠোঁটে কালশিটে, ক্ষত, ফোস্কা ও ফোলা ভাব, লাল দাগ যদি দীর্ঘ দিনেও না কমে।
২) ঠোঁটে লাল, সাদা দাগ বা প্রলেপ।
৩) ঠোঁটে রক্তপাত বা ব্যথা।
৪) চোয়াল ফুলে যাওয়া।
উল্লেখ্য যে, এ সব উপসর্গ ঠোঁটের ক্যানসারের উপসর্গ না-ও হতে পারে। নির্ভুল ও সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য এই সব উপসর্গ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
আর কোন রোগের প্রভাবে ঠোঁটের রং বদলে যেতে পারে?
১) অ্যাডিসনস ডিজিজ: এই রোগে আক্রান্ত হলে ঠোঁটের হাইপার পিগমেন্টেশন বা অতিরঞ্জন ঘটতে পারে। এই রোগে শরীরের অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে কর্টিসোল এবং অ্যালডোস্টেরন নামক দু'টি হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। এই হরমোনগুলির ভারসাম্য নষ্ট হলে দেহের বিভিন্ন অংশ কালো হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে ঠোঁটেও।
২) সায়ানোসিস: ঠোঁটের রং শুধু গাঢ় হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে যদি নীলচে হয়ে আসে, তবে তা সায়ানোসিস নামক রোগের লক্ষণও হতে পারে। ঠোঁট নীলচে হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে যদি শ্বাসকষ্টও হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে এই প্রকার সমস্যা দেখা দেয়।
এ ছাড়াও শরীরে হরমোনের তারতম্য হলে, ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি হলে, শরীরে আয়রন জমতে শুরু করলে বা নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের প্রভাবে ঠোঁটের রং কালচে হতে পারে।