নারকেলডাঙার বাসিন্দা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠল। ছবি-প্রতীকী
পারিবারিক বিবাদের জেরে অন্তঃসত্ত্বাকে লাথি, মারধর। প্রায়ই এমন খবর উঠে আসে শিরোনামে। রবিবার সন্ধ্যায় ফের এমন ঘটনার সাক্ষী হল কলকাতা। নারকেলডাঙার বাসিন্দা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আর এর পর নতুন করে প্রশ্ন ওঠে অন্তঃসত্ত্বাদের সুরক্ষা নিয়ে। শরীরে অন্য প্রাণের উপস্থিতি টের পাওয়ার মুহূর্ত থেকেই তাঁদের সাবধানে থাকার কথা বলে থাকেন চিকিৎসকরা। কারণ সন্তানের বিকাশ কতটা দ্রুত ও সুষ্ঠু ভাবে হবে, তা পুরোটাই নির্ভর করে মায়ের শারীরিক অবস্থার উপর। অনেক মহিলাই আছেন, যাঁরা ঘরে এবং বাইরে— দু’দিকই সমান হাতে সামলান। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও তার অন্যথা হয় না। সাত-আট মাস পর্যন্ত নিয়মিত অফিস করেছেন— এমন উদাহরণও কিন্তু কম নয়। অনেকে আবার গণপরিবহণও ব্যবহার করেন। শরীরের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি, এই সময়ে কোনও ভাবে পেটে আঘাত না লাগে, সে বিষয়টিও বারবার হবু মায়েদের মনে করিয়ে দেন চিকিৎসকরা। বাড়িতেও চলাফেরার সময়ে বাড়তি সতর্কতা মেনে চলার কথা বলে থাকেন। টেবিলের কোণ, অন্যান্য আসবাবের বর্ধিত অংশ, পিচ্ছিল জায়গা— এগুলি থেকে সাবধানে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে তা মা এবং শিশুর ক্ষেত্রে ঝুঁকির। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি হয়। তবে সব ঘটনা এক রকম হয় না। যেমন নারকেলডাঙার ঘটনায় খবর পাওয়া গিয়েছে, মা এবং সন্তান আপাতত দু’জনেই সুস্থ। কারণ পরিস্থিতি নির্ভর করে আঘাতের তীব্রতার উপর।
কিন্তু সন্তান জন্মের ঠিক আগে কোনও কারণে পেটে আঘাত লাগলে বা আচমকা পড়ে গেলে কী পরিণতি হতে পারে? এ প্রসঙ্গে স্ত্রীরোগ চিকিৎসক দিলীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বাদের খুব সতর্ক থাকা উচিত। যে কোনও রকম আঘাত বাঁচিয়ে চলা জরুরি। এই সময়ে পড়ে গেলে বা পেটে আঘাত পেলে প্রচুর রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। সরাসরি জরায়ুতে আঘাত এলে মায়ের মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে যায়। তবে শুধু শরীর নয়, আঘাতের কারণ মায়ের মনেও এক ধরনের ‘ট্রমা’ তৈরি হতে পারে। যা মন থেকে দূর করা অনেক সময়ে দুরূহ হয়ে পড়ে।’’