সাইকেল চালিয়ে সুস্থ রাখতে পারেন শরীর ও মন। ছবি: সংগৃহীত।
শহরের রাস্তায় কিঞ্চিত কম দেখা গেলেও, মফস্সলে গেলে এখনও শোনা যাবে সাইকেলের ঘণ্টি। টোটো-অটো-বাইকের চাপ সামলে ফাঁক-ফোঁকড় দিয়ে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন আরোহী।
স্কুল যাওয়া থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ, এখনও শহরতলি থেকে গ্রামাঞ্চলে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম বাই সাইকেল। যদিও চলতি কথায় দু’-চাকার এই যান সাইকেল নামেই পরিচিত। সাইকেল চালিয়ে নিত্য যাতায়াত বহু মানুষের। সেই যাতায়াতেই যে নীরবে শরীরের ভাল হচ্ছে সেটাই বা ক’জন জানেন!
বাই-সাইকেলের গুরুত্ব
সাইকেল চেপে দিব্যি পাড়ি দেওয়া যায়, এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। সেই পথটুকু অন্য যানবাহনে পাড়ি দিতে পরিবেশের যত ক্ষতি হয়, তা কিন্তু হয় না সাইকেলে। কার্বন নির্গমনের প্রশ্ন নেই, ফলে পরিবেশের ক্ষতি হয় না। জ্বালানি লাগে না বলে, অর্থও সাশ্রয় হয়। তার উপর সাইকেল চালানোর ফলে ব্যায়াম হয় শরীরেরও। সুতরাং দিনে দিনে সাইকেলের গুরুত্ব বাড়ছে বিশ্বজুড়েই।
কী কী উপকার হয়?
হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখে: বাই-সাইকেল চালানোর ফলে গোটা শরীরের ব্যায়াম হয়। বিশেষত সাইকেল চালানোয় কার্ডিওভাস্কুলার ব্যায়াম হওয়ায় হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। নিয়মিত সাইক্লিং রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
পেশি মজবুত করে: প্যাডেল করে সাইকেল চালাতে হওয়ায় পায়ের পেশি মজবুত হয়। চড়াই-উতরাই জায়গায় বাই-সাইকেল চালালে শরীরের উপরের অংশের পেশিও শক্তেপাক্ত হয়ে ওঠে। দৌড়লে পায়ে ও হাড়ের সংযোগস্থলে বেশি চাপ পড়ে। কিন্তু সাইকেলের প্যাডেল চালানোর ক্ষেত্রে হাড়ের সংযোগস্থলে অতিরিক্ত চাপ না পড়ায় বড় রকমের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না।
ক্যালোরি ক্ষয় করতে সাহায্য করে: সাইকেল চালানোর ফলে যেহেতু পুরো শরীরের ব্যয়াম হয় তাই ক্যালোরি ক্ষয় হয় দ্রুত। পাশাপাশি, সাইকেল চালানোর জন্য শরীরের ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজন হয়। একসঙ্গেই রাস্তায় সাইকেল চালাতে দরকার মন সংযোগের। ফলে মন ও শরীর দু’টি একসঙ্গে সচল থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল
শরীরের জন্য তো বটেই, মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও সাইক্লিংয়ের ভূমিকা রয়েছে। সাইকেল চালানোর সময়ে নির্গত হয় এন্ড্রোফিন হরমোন। যা মন ও মেজাজ ভাল করতে কার্যকরী ভূমিতা পালন করে।
খোলা জায়গায় সাইকেল চালালে বাইরের হাওয়া এসে লাগে চোখে-মুখে। শরীরের পাশাপাশি মনও তরতাজা হয়ে ওঠে তাতে। কোনও কারণে দুশিন্তা থাকলেও কমে। নিয়মিত সাইকেল চালালে অবসাদ, উদ্বেগের মতো সমস্যাও অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে থাকা সম্ভব। ঘুমও ভাল হয়।
সাইক্লিংয়ের ফলে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ ভাল হয়, যার ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বাড়ে।
জিমে না বাইরে?
সাইকেল চালানোর এত গুণের জন্য জিমেও ব্যবস্থা থাকে সাইক্লিং-এর। রাস্তায় চালানোর সময়-সুযোগ না হলে জিমেই সাইক্লিং করা যেতে পারে। তবে বাইরে খোলা হাওয়ায় সাইকেল চালালে ফল মিলবে আরও বেশি।