বয়স বাড়লে শরীরের নিজস্ব যে তাপমাত্রা, তা এমনিতেই কমতে থাকে। ছবি: সংগৃহীত
জানুয়ারির শীতে কাবু শহর থেকে শহরতলি। পারদ ক্রমশ চড়ছে। বছরের শেষেও আঁচ পাওয়া যায়নি, শীতের তীব্রতা এতটা বাড়তে পারে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই সময় শিশু এবং বয়স্কদের বেশি করে সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ এই দুই বয়সে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। ফলে শীতকালীন সংক্রমণ যেন জাঁকিয়ে বসে। তার উপর করোনা নিয়ে একটা আতঙ্ক তো রয়েছেই। কো-মর্বিডিটি রয়েছে যাঁদের, অর্থাৎ বয়স্কদের বিশেষ সুরক্ষা নেওয়ার কথা বলছেন চিকিৎসকরা। বয়স বাড়লে শরীরের নিজস্ব যে তাপমাত্রা, তা এমনিতেই কমতে থাকে। শীতকালে এই সমস্যা আরও বাড়ে। ফলে শরীর নিয়ে সচেতন না হলে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। শীতকালে সুস্থ থাকতে বয়স্ক কোন নিয়মগুলি মেনে চলবেন?
১) শীতকালে নিয়ম করে শরীরচর্চা করা জরুরি। এই নিয়ম আরও বেশি করে প্রযোজ্য বয়স্কদের জন্য। এই সময় শরীর সচল রাখতে শরীরচর্চার প্রয়োজন রয়েছে। শীতের আলসেমি কাটতে চায় না কিছুতেই। কিন্তু সেই আলস্য সরিয়ে রেখেই শরীরচর্চা করতে হবে। বার্ধক্যে সুস্থ থাকার এর চেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় আর নেই।
২) শীতকালে নিজেকে আর্দ্র রাখুন। কারণ শরীর আর্দ্রতা হারালে আরও অনেক রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। তাই জলের ঘাটতি তৈরি হতে দেওয়া যাবে না। সে জন্য প্রচুর পরিমাণে জল তো খেতে হবে। বয়সকালে শরীর এমনিতেই শুষ্ক হয়ে যায়। তাই জল খাওয়ার কথা ভুললে চলবে না। জলই পারে শরীর সুস্থ রাখতে।
৩) বাইরে বেরোলে তো বটেই, বাড়িতে থাকাকালীনও গরম পোশাক পরে থাকুন। ঠান্ডা যাতে কোনও ভাবেই না লাগতে পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। এক বার ঠান্ডা লেগে শ্লেষ্মা জমলে মুশকিল হতে পারে। সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে ফুসফুসেও। সাবধানে থাকা জরুরি।
৪) শীতে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে খাওয়ার পাতেও রাখতে হবে স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার। বেশি করে সবুজ শাকসব্জি খান। পাতে রাখুন মরসুমি ফল। বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন। খাবারও খান নির্দিষ্ট সময়ে। খাওয়াদাওয়ায অনিয়ম এই সময় একেবারেই করবেন না।
কোনগুলি করবেন না?
১) দিনে কিংবা রাতে, শীতে বেশি ক্ষণ বাইরে থাকবেন না। ঠান্ডা তো আছেই। সেই সঙ্গে বাইরে হাওয়ার তীব্রতাও অনেক বেশি। সেই হাওয়ার সংস্পর্শে থাকলে সর্দিকাশি, ঠান্ডা লাগার মতো সমস্যা বিশাল আকারে হানা দেয় শরীরে।
২) ভিটামিন ডি শরীরের অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। হাড়ের যত্ন নেওয়া থেকে শুরু করে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো— শরীরের যত্ন নিতে এই ভিটামিনের জুড়ি মেলা ভার। এই ভিটামিনের সমৃদ্ধ উৎস হল সূর্যালোক। কিন্তু শীতকালে সূর্যালোক খুব কম সময়ের জন্য পাওয়া যায়। তাই ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবারের উপর ভরসা রাখুন। সারা দিনে এক বারেরও জন্য হলেও একবার রোদে গিয়ে দাঁড়ান।
৩) এক জায়গায় সব সময় বসে থাকবেন না। হাঁটাচলা করুন। এই সময় ক্লান্তি ঘিরে ধরে। আলসেমি থাকে। এগুলি পাত্তা দিলে চলবে না। শরীর চাঙ্গা রাখতে তাই শরীরচর্চার অভ্যাস বন্ধ করলে চলবে না।