Vidya Balan

প্রদাহের কারণেই ফুলে গিয়েছিল শরীর? ওজন বৃদ্ধির কারণ জানালেন বিদ্যা, এই সমস্যা কি আপনারও হতে পারে?

বিদ্যা বক্তব্য, নানা রকম শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে জানা গিয়েছে যে, মারাত্মক প্রদাহ বা ‘ইনফ্লামেশন’ হচ্ছিল তাঁর শরীরে। এই প্রদাহের কারণেই শরীর ফুলে যাচ্ছিল তাঁর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৭
Vidya Balan says why she gained weight

কেন ওজন বেড়েছিল বিদ্যার? ফাইল চিত্র।

ওজন বেড়ে যাওয়ায় নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়েছে বিদ্যা বালনকে। অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছিলেন, মাঝে অনেকটাই ওজন বেড়েছিল তাঁর। শরীরচর্চা, ডায়েট করে ওজন কমানোর চেষ্টা করেও তেমন লাভ হয়নি। সম্প্রতি ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’ ছবিতে ফের ‘মঞ্জুলিকা’র চরিত্র নিয়ে ফিরে এসেছেন বিদ্যা। তাঁকে দেখে বোঝাই গিয়েছে যে, অনেকটাই ওজন ঝরিয়েছেন। ঠিক কী কারণে ওজন বেড়েছিল, তা জানিয়েছেন নিজেই। বিদ্যার বক্তব্য, নানা রকম শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করিয়ে জানা গিয়েছে যে, মারাত্মক প্রদাহ বা ‘ইনফ্লামেশন’ হচ্ছিল তাঁর শরীরে। এই প্রদাহের কারণেই শরীর ফুলে যাচ্ছিল তাঁর। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ডায়েট ও ওষুধপত্র নিয়ম মেনে খেয়েই ওজন কমে।

Advertisement

এখন কথা হল, এই প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন আসলে কী? এমন সমস্যা কি আপনারও হতে পারে?

এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল জানাচ্ছেন, শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকেই জন্ম প্রদাহের। বাইরে থেকে কোনও প্রকারের ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস বা জীবাণুর সংক্রমণ হলে, শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। জীবাণুকে বাধা দেওয়ার জন্য শ্বেত রক্তকণিকার মাধ্যমে বিভিন্ন রাসায়নিক, উৎসেচকের ক্ষরণ শুরু হয়। ফলে শরীরে নানা লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া, পেশিতে টান ধরার মতো সমস্যাও হতে পারে। তখন বলা হয়, শরীরে প্রদাহ হচ্ছে।

চিকিৎসকের কথায়, এই প্রদাহ ‘অ্যাকিউট’ বা ‘ক্রনিক’ হতে পারে। ‘অ্যাকিউট’ মানে হল, তাৎক্ষণিক অর্থাৎ হঠাৎ করে পাওয়া আঘাত, ক্ষত বা জীবাণু সংক্রমণ হলে তার থেকে শরীরের কিছু জায়গায় প্রদাহ হয়। এটি ওষুধে সারানো যায়। কিন্তু, ‘ক্রনিক’ প্রদাহের কারণ আরও অনেক কিছু হতে পারে। যেমন, লাগাতার শরীরে জীবাণু সংক্রমণ, অস্বাস্থ্যকর ডায়েট, হজম প্রক্রিয়ায় গোলমাল, শরীরে টক্সিন জমে গেলে বা প্রচণ্ড উদ্বেগ-মানসিক চাপ থেকেও প্রদাহ হতে পারে। তখন শরীরের কোষগুলির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমতে থাকে, সেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। ফলে, শরীর ফুলতে শুরু করে।

‘ক্রনিক’ প্রদাহ হলে ইনসুলিনের ভারসাম্যও নষ্ট হয় বলে মত চিকিৎসকের। তখন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকে যা অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটে বদলে যায় এবং কোষে জমা হতে থাকে। প্রদাহের কারণে লেপটিন হরমোনের ক্ষরণও কমতে থাকে। এই হরমোন হজম প্রক্রিয়ায় বিশেষ ভূমিকা নেয়। এর ক্ষরণ কমে গেলে বিপাকের গোটা প্রক্রিয়াই ব্যাহত হবে, ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমা হতে থাকবে। তখন ওজন বাড়তে শুরু করবে।

সমাধান কিসে?

জীবনযাত্রা ও খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস ‘ক্রনিক’ প্রদাহের কারণ হতে পারে বলেই মত চিকিৎসকের। খুব বেশি বাইরের খাবার, ভাজাভুজি খাওয়া ও লাগামছাড়া অ্যালকোহল পান এর কারণ হতে পারে। প্রদাহ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে রোগীকে স্টেরয়েড দেওয়া ছাড়া গতি থাকে না। তাই সুষম খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত জল পান ও ঘুম এবং নেশার মাত্রা কমানোই এই সমস্যা সমাধানের উপায় হতে পারে। ব্রাউন রাইস, ওট্‌স, রাগির মতোর দানাশস্য, সবুজ শাকসব্জি, ফল, মাছ খেলে প্রদাহ কমতে পারে। ডায়েটে রাখতে পারেন কাঠবাদাম, চিয়া বীজ, সূর্যমুখীর বীজ। কাঁচা হলুদ ও আদাতেও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে। যে কোনও রকম চকোলেট, চিনি দেওয়া ঠান্ডা পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে। আর চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ ও সাপ্লিমেন্ট খেয়ে যেতে হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement