ঠান্ডা পাউডার ছাড়াই শরীর চাঙ্গা রাখবেন কী ভাবে? —ফাইল চিত্র।
অস্বস্তিকর গরম থেকে এখনই রেহাই পাচ্ছেন না রাজ্যবাসী। চলতি সপ্তাহে গরমের পারদ আরও চড়বে, এমনটাই পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এই গরমে সুস্থ থাকতে চিকিৎসকরা বার বার চড়া রোদ এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কাজের প্রয়োজনে বাইরে বেরোতেই হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে চাঙ্গা রাখবেন শরীর?
দুপুরের চড়া রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু বাড়িতে বসেও তো থাকা যায় না! তবু দুপুর ১২টা থেকে ৩টের মধ্যে যতটা সম্ভব অফিসের মধ্যে বা ছায়ায় কাজ করুন। শরীরিক অসুবিধা হচ্ছে, এমন সব কাজ এই সময়ে এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। অন্য দিকে, দুপুরে বাড়িতে পর্দা দিয়ে রোদ আটকানো আর রাতের দিকে জানলা খুলে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কোনও ব্যক্তি গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে বা তাঁর হিট স্ট্রোক হয়েছে বুঝলে দ্রুত তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যত ক্ষণ না চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে, তত ক্ষণ অসুস্থ ব্যক্তিকে ছায়ায় নিয়ে গিয়ে শুইয়ে রাখা বা ভিজে রুমাল, গামছা বা কাপড় দিয়ে চোখ মুখ মুছিয়ে দেওয়া এবং প্রয়োজনে শরীরের তাপমাত্রা কমাতে শরীরে ও মাথায় জল দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
সাধারণত চড়া রোদে নিজেকে সুস্থ রাখতে ঘরে-বাইরে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে—
১) দিনে কমপক্ষে তিন লিটার জল খেতেই হবে। বাইরে বেরোলে পারলে ওআরএস বা ডাবের জল, ঘোল, নুন-চিনি জল খাওয়া দরকার। ঘন ঘন ঠোঁট শুকিয়ে আসা, মাথা যন্ত্রণা কিংবা ক্লান্তি শরীরে ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ। এমন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হোন।
২) দুপুর ১২টা থেকে তিনটে পর্যন্ত রোদ এড়িয়ে ছায়ায় থাকুন। ওই সময়ে রোদে বেরোলে ছাতা, টুপি, রোদ চশমা অবশ্যই ব্যবহার করুন। সানস্ক্রিন মাখতে ভুলবেন না যেন।
৩) বাইরে থাকলে মাথা, ঘাড়, মুখে ভেজা কাপড় ব্যবহার করুন। সব সময়ে রোদে বেরিয়ে রুমাল ভেজানোর সুযোগ হয় না, তাই সে ক্ষেত্রে ওয়েট টিস্যু সঙ্গে রাখতে পারেন। গরমের সময়ে দিনে তিন থেকে চার বার স্নান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। শরীরে যেন ঘাম না বসে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। কড়া রোদ থেকে ফিরেই এসিতে ঢোকা উচিত নয়। অনেকে ১৬, ১৮, ২০ ডিগ্রিতেও এসি চালান। এটা আদৌ ঠিক নয়। এসি অন্তত ২৪ ডিগ্রির উপরে থাকা উচিত। প্রয়োজনে ২৭ ডিগ্রিতে এসি চালিয়ে ফ্যান চালান।
৪) আঁটোসাঁটো পোশাক না পরে হাল্কা সুতির পোশাক পরুন। হালকা রঙের জামা পরে রোদে বেরোন। কালো, গাঢ় নীল, সবুজ রংগুলি এড়িয়ে চলুন।
৫) হাই প্রোটিন, তেলেভাজা, যে কোনও রকম রঙিন জল এড়িয়ে চলুন। চিকিৎসকদের একেবারে অপছন্দের তালিকায় রাস্তার ধারের কাটা ফল, মশলাযুক্ত খাবার ও জাঙ্ক ফুড। তাঁদের মতে, অফিসপাড়ায় দুপুরে কাটা ফল খেয়ে পেটের অসুখ নিয়ে ভুগছেন, এমন উদাহরণ অসংখ্য।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। ডায়েটে কোনও রকম বদল আনার আগে কিংবা গরমে শরীরে কোনও রকম অস্বস্তি হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।