মধ্যবয়সে পৌঁছতেই দেহের নিম্নাঙ্গে জমা মেদের পরিমাণ চিন্তার ভাঁজ ফেলছে কপালে। ছবি- সংগৃহীত
একটা বয়সের পর মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা বন্ধ হয়ে আসা স্বাভাবিক। সেই নিয়ম মেনেই ৪০-এর পর থেকে প্রজননে সহায়ক বিভিন্ন হরমোনের মাত্রাও কমে আসতে থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ৪৫ থেকে ৫৫-এর কাছাকাছি গিয়ে পুরোপুরি ঋতুবন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলেন, এই সময়ে সব মহিলাকেই কিছু শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। হরমোনের ক্রমাগত ওঠাপড়ায় চেহারাতেও নানা রকম পরিবর্তন আসে। পরিমিত খাবার খাওয়ার পরেও দেহে মেদ জমতে শুরু করে। হঠাৎই চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন আসে ওজনে।
ঋতুবন্ধের পর ওজনে পরিবর্তন আসে কেন?
১) হরমোনের প্রভাবে
ঋতুবন্ধের সময় কাছাকাছি আসতে শুরু করলে অনেকের শরীরেই মেদ জমতে শুরু করে। ইস্ট্রোজেন হরমোনের উৎপাদন কমে গেলে সারা দেহ থেকে চর্বিজাতীয় পদার্থ পেট এবং কোমর সংলগ্ন অঞ্চলে জমতে শুরু করে। যা পরবর্তী কালে হৃদ্রোগের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তোলে।
২) পেশি ক্ষয়ে যাওয়া
ঋতুবন্ধের সময় হয়ে এলে অনেক মহিলার দেহের পেশি দুর্বল হতে থাকে। যা সামগ্রিক ভাবে বিপাকহারের পর প্রভাব ফেলে। বিপাকহার কমে গেলে মেদ জমার পরিমাণও বাড়তে শুরু করে।
৩) জীবনধারার পরিবর্তন
এই সময়ে মানসিক পরিস্থিতিও ভাল থাকে না অনেক মহিলার। তাই নিজের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারেও গাফিলতি থেকে যায় অনেকের। নিয়মিত শরীরচর্চা না করা, মন ভাল রাখতে যখন যা ইচ্ছে খেয়ে ফেলার প্রবণতা থেকেও কিন্তু মেদ বেড়ে যেতে পারে।
কী কী করলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়?
১) নিয়মিত শরীরচর্চা
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত শরীরচর্চা করতেই হবে। যার ফলে শুধু শরীর নয়, মনও ভাল থাকবে। অতিরিক্ত মেদও শরীরে জমতে পারবে না। এই সময়ে শরীর যে যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়, তার সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
২) মানসিক চাপ মুক্ত থাকা
স্বাভাবিক নিয়মে যা আসছে, তা গ্রহণ করে নেওয়াই চাপমুক্ত থাকার সহজ পন্থা। মোটা হয়ে যাওয়া বা দেখতে খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে মনের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করার কোনও মানে নেই। তার চেয়ে বরং ধ্যান, প্রাণায়ামের সাহায্যে মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।
৩) স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া
এই সময়ে শরীর এবং মনের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ ভাবে যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে, হাড় মজবুত করতে, শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন, প্রোটিন এবং খনিজের জোগান দিতে সাধারণ খাবারের পাশাপাশি নিয়মিত ফল, বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বীজ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।