শিশুদেরও ডায়াবিটিস হয়।
বাড়ির কোনও সদস্যের ডায়াবিটিস থাকলে অনেক সময়ে পরিবারের ছোট সদস্যদেরও ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় কয়েক গুণ। বাড়ির কোনও এক জন সদস্যও যদি ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে পরিবারের ছোটদের প্রতি বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতে, টাইপ-১ ডায়াবিটিসের জেরে শিশুদের বার বার মূত্রত্যাগ, অতিরিক্ত খিদে, তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি যে কোনও ভাইরাল সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে পড়াশোনা, খেলাধুলো-সহ নানা কাজে।
শহুরে খাদ্যাভাসের কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের তালিকাই দীর্ঘ থাকে। শিশুদের জলখাবারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবারই দেখা যায়। সন্ধ্যা হলেই ম্যাগি, মোমো, চিপ্স, বার্গার। এতেই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। তার উপরে অধিকাংশ শহুরে শিশু, কিশোর-কিশোরী খেলাধুলোয় অভ্যস্ত নয়। দিনের অধিকাংশ সময়েই তারা বসে কাজ করে। ভিডিয়ো গেম খেলে কিংবা ইন্টারনেটেই অবসর সময় কাটায় তারা। এই অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জেরেই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?
১) খুদের কি বার বার জল তেষ্টা পাচ্ছে? এটি কিন্তু ডায়াবিটিসের লক্ষণ। ডায়াবিটিসের কারণে জিভে লালার পরিমাণ কমে যায়। সেই কারণে গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যাও হয়। বার বার জল তেষ্টা পায়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস থাকলে তা থেকে গলায় জ্বালা, আলসার, সংক্রমণ পর্যন্ত হতে পারে।
২) শিশুর দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে? এটি কেবল টিভি দেখার বা মোবাইল ঘাঁটার ফল নাও হতে পারে। ডায়াবিটিস শরীরে বাসা বাঁধলেও চোখের সমস্যা হতে পারে।
৩) খুদের দাঁত মাজতে গিয়ে দেখছেন মাড়ি থেকে রক্ত পড়ছে? আপনি হয়তো ভাবছেন ব্রাশ বদলাতে হবে। কিন্তু ডায়াবিটিস থাকলে মাড়িতে প্রদাহ হয় এবং মাড়ি থেকে রক্তও পড়ে। সময়ে এর ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে মাড়িতে সংক্রমণ হতে পারে।
৪) বার বার প্রস্রাব করাও কিন্তু ডায়াবিটিসের লক্ষণ। সন্তান যদি বার বার বাথরুমে যায়, তা হলে বুঝতে হবে তার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়েছে।
৫) শিশুর শরীরে মাঝেমধ্যেই র্যাশ বেরোচ্ছে? গায়ে হাতপায়ে কালো ছোপ পড়ছে? তা হলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে। শিশুর মুখের ভিতরের অংশ, জিভে মাঝেমাঝেই ঘা হলে বা জ্বালা করলে বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন না। ডায়াবিটিসের কারণে এমন হতেই পারে।